
অনেক সময় ভীষণ সর্দি হলে হাঁচির মধ্য দিয়েই পরম শান্তি পাওয়া যায়। আবার কখনও কখনও অনবরত হাঁচি হতে থাকে। অনেকেই ভাবেন অতিরিক্ত ঠাণ্ডা লাগার ফলে এরকম হচ্ছে। তবে রায়নাইটিস এলার্জিরও ফলে এটা হতে পারে। বায়ুমণ্ডলের ধুলো, মাটি, পশু-পাখির চুল-পালক, ফুলের পরাগ, বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর গ্যাস, ধোঁয়া প্রভৃতি নাকের মধ্য দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। এর কারণেই কখনও কখনও অনবরত হাচি হতে থাকে। সাধারণ সর্দি-কাশি প্রধানত ভাইরাস সংক্রমণের ফলে হয়। এতে নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি পড়ে। জ্বর আসে। এটা হলো ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ। কিন্তু রায়নাইটিস এলার্জি হলে অনবরত হাঁচি হবে। সারা শরীরে ব্যথা বা জ্বর হয় না। নাক, কান, গলা চুলকাতে পারে। চোখ দিয়ে পানি পড়বে।জেনে নিন হাঁচি নিয়ে কিছু মজার তথ্য:
● আমরা কখনোই চোখ খুলে হাঁচি দিতে পারিনা। হাঁচির সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে আপনার দুই চোখ বন্ধ হয়ে আসে। প্রচণ্ড বেগে হাঁচি বের হওয়ার সময় মানুষের পক্ষে চোখ খুলে রাখা সম্ভব হয় না। এটাকে বলে ইনভলেন্টারি রিফ্লেক্স।
● আমরা যখন হাঁচি দেই তখন আমাদের শরীরের ভিতর সমস্ত ধরণের কাজ বন্ধ হয়ে যায় তবে হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বন্ধ হয় না। সুস্থ্য স্বাভাবিক অবস্থায় হৃদযন্ত্র কোনো কারণে বন্ধ হয় না বা হঠাৎ একটি স্পন্দন মিস করে না। তা ছাড়া হাঁচির আগে মানুষ বড় আকারের শ্বাস টেনে নেয়। ফলে হাঁচির মুহূর্তে ভাগুস নার্ভের সংকোচন-প্রসারণ বোঝা যায় না। তাই এ সময় মানুষ হৃদযন্ত্রে তেমন কিছু অনুভব করে না।
● আমরা যখন হাঁচি দেই তখন বাতাস প্রতি ঘণ্টায় ১০০ মাইল বেগে আমাদের নাক থেকে বের হয়।
● অন্ধকার থেকে আলোতে গেলে কিংবা সূর্যের দিকে তাকালে অনেকেরই হঠাৎ হাঁচি আসে। বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে বলে ফটিক স্নিজ রিফ্লেকস।
● আপনার হাঁচি ঘণ্টায় ১০০ মাইল বেগে বের হয়। তবে অনেকে আছেন যারা বহু কাঠখড় পুড়িয়ে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হাঁচি ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৩৫ মাইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন।
● হাঁচির মাধ্যমে বের হওয়া জীবাণু বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। হালকা-পাতলা হাঁচিতে জীবাণু চারদিকের ৫ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত ছড়াতে পারে। আর জোরেসোরে বের হওয়া হাঁচি তো ৩০ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত এলাকা দূষিত করে দেয়।
● কিছু সময় হঠাৎ করে হাঁচি চলে আসে। আবার কিছু সময় এমন বোধ হয় যে হাঁচি আসবে। এমন কিছু পরিবেশ রয়েছে যেখানে শব্দ করে হাঁচি দেয়াটা অস্বস্তিকর হতে পারে। এসব পরিস্থিতিতে আমরা নাক ধরে হাঁচিটিকে সামাল দেয়ার চেষ্টা করি। এটা খুবই বাজে একটি কাজ। এতে চোখের রক্তের ধারকগুলো ফেটে যেতে পারে, মস্তিষ্কের রক্তের ধারকগুলো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং কানে শোনার জন্য যে ড্রাম রয়েছে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
কি করে বাঁচবেন
● পশুপাখি থেকে দূরে থাকুন।
● বিছানার চাদর, পর্দা ভালো করে পরিষ্কার করুন।
● ঘর ভালো করে পরিষ্কার করুন।
● বই এবং ফার্নিচারের ধুলো একেবারেই ঝাড়বেন না। অন্য কাউকে দিয়ে তা পরিষ্কার করান।
● যারা সিগারেট পান করেন তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। ঘরে কাউকে সিগারেট খেতে দেবেন না।
● রাস্তায় গাড়ির ধুলো এড়িয়ে চলুন। গাড়ি সামনে এলে নাকে রুমাল দিন।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]