আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হল ‘প্রাণের গান’
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৪৪
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হল ‘প্রাণের গান’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী ‘প্রাণের গান’।


প্রদর্শনীর বেশিরভাগ কাজেই লাল, নীল, হলুদ, কমলা এসব উজ্জ্বল রঙের সঙ্গে রয়েছে কালো রং ব্যবহার। তাতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষের বিস্তৃতি, গাছের ফাঁকফোকরের ভেতর আলোর ফিনকি ও শৈশবস্মৃতির অনুভবতাড়িত আলোছায়ার স্মৃতিধৃত রূপ। নীল রঙের ছোঁয়া আছে প্রায় প্রতিটি কাজে। পৌরাণিক সাহিত্যের নায়িকারা অর্থাৎ রাধা, ললিতা, বিশাখা বা বেহুলা চরিত্রগুলো বারবার এসেছে সংকীর্তনের ঢঙে।


জলরং, তেলরং ও অ্যাক্রেলিক মাধ্যমে চিত্রিত ৬৪টি চিত্রকর্মের সেজেছে এই প্রদর্শনী। এটি চলবে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। সোম থেকে শনিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ।


গাছ, মাটি, নদী, জল ও মেঘ এসেছে শিল্পীর কিছু ক্যানভাসে। বাংলার সরাচিত্রের মোটিভে আঁকা সিরিজচিত্রে রয়েছে লোকচিত্রকলার মিশেল। এর ভেতরের ফুল, নারী অবয়ব, গাছ ও লতাপাতা কল্পিত রসায়নে বিন্যস্ত।


আবার কিছু ছবিতে কখনো গৌড়ীয় নৃত্য, কখনো দেশ, কখনো বাগেশ্রী, কখনো খাম্বাজ কিংবা মালকোশ রাগ; কখনো মেঘের লীলাখেলা, কখনো হেমন্তের বিকেল, কখনো মায়াবি গোধূলি, কখনো বাংলার রমণী, কখনো লীলাকীর্তন, কখনোবা পৌরাণিক উপাখ্যানের বিষয়-আখ্যান উঠে এসেছে।


নানা মাধ্যমের মাঝে শিল্পকর্ম নির্মাণে জলরংকে প্রাধান্য দিয়েছেন চিত্রের জমিনজুড়ে রয়েছে ত্রিমাত্রিক মিশ্র রঙের খেলা। জলরং ওয়াশ পদ্ধতির এসব কাজে রঙের চলনে ফিগারের অবয়ব মেঘলীলার অনুরূপ। কোথাও স্পষ্টকরণের চেষ্টা নেই।


সংগীতের সুর ও কবিতার ছন্দে আলোড়িত হয়ে সেজেছে জাহাঙ্গীরের ক্যানভাস। শিল্পকর্ম সৃজনে নিজস্ব করণকৌশলের প্রয়োগ করেছেন এই শিল্পী। যেখানে প্রাচ্যরীতির ওয়াশ পদ্ধতির ও পাশ্চাত্যের টারশিয়ারি ধারার রং লেপনের মেলবন্ধন ঘটেছে। সেই যুগলবন্দি রসায়নে সৃষ্ট চিত্রজমিনে উদ্ভাসিত হয়েছে নারীর অবয়ব, বৃক্ষ, লতাপাতাসহ বিবিধ বিষয়।


৩ নভেম্বর, শুক্রবার হেমন্তের সন্ধ্যায় এই শিল্পায়োজনের সূচনা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন সোসাইটি ফর প্রমোশন অব বাংলাদেশ আর্ট বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য আনিস এ খান, আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস, শাশা ডেনিমসের পরিচালক জেরিন মাহমুদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ওরিয়েন্টাল বিভাগের অধ্যাপক ড. মলয় বালা এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের পরিচালক ফ্রঁসোয়া ঘ্রোজঁ।


অনুভূতি প্রকাশে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মূলত শিল্প এবং সাহিত্যের নির্যাস রয়েছে আমার প্রতিটি ক্যানভাসে। অধিকাংশ সময় গান শুনতে ছবি আঁকি। সেখানে শাস্ত্রীয় সংগীত থেকে ফকির লালন সাঁইয়ের গান হয়ে ওঠে ছবি আঁকার অপরিহার্য অনুষঙ্গ। একইভাবে কবিতার ছন্দময়তা থেকে গল্প-উপন্যাসের নানা চরিত্র আমাকে ধাবিত করে শিল্প সৃজনের পথে।


অতিথিরা বলেন, জাহাঙ্গীর ছবি আঁকেন প্রাণের টানে এবং সৃজনানন্দের উৎসবে মত্ত হয়ে। দীর্ঘদিন ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টুডিওর রেসিডেন্স আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করায় জলরং ওয়াশ পদ্ধতির একটি নিজস্ব শৈলী তৈরি করেছেন তিনি। অন্যদিকে রং মিশ্রণের পরিপক্বতা তার চিত্রকলার অনন্য গুণ। সেই বাস্তবতায় রঙের পরিপক্ব বিন্যাসের সঙ্গে বোধের পরিপক্বতার সমন্বয় ঘটেছে তার চিত্রপটে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com