মাংস কতটুকু খেলে থাকবে না স্বাস্থ্যঝুঁকি?
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৩, ০৯:৪৫
মাংস কতটুকু খেলে থাকবে না স্বাস্থ্যঝুঁকি?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কোরবানির ঈদ মানেই রেড মিট বা লাল মাংস। রেড মিট খুব উপকারী। এতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। প্রতি তিন আউন্স গরুর মাংসে জীবন ধারণের জন্য ১০টি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান থাকে।


রেড মিট আয়রনের দারুণ উৎস। রেড মিটের আয়রন শরীরে খুব সহজেই শোষিত হয়। এ কারণে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও গর্ভবতী মায়েদের আয়রনের ঘাটতি পূরণে রেড মিট বিশেষভাবে সহায়ক।


এ ছাড়া রেড মিটে ভিটামিন বি-১২ এবং জিংক থাকে। ভিটামিন বি-১২ দেহের স্নায়ুতন্ত্র ও রক্তের লোহিত রক্তকণিকাকে সুস্থ রাখে। আর জিংক দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। রেড মিটের প্রোটিন হাড়ের গঠন ও মাংসপেশি তৈরিতে অপরিহার্য।


তবে, রেড মিটের স্যাচুরেটেড বা সম্পৃক্ত চর্বি হৃদরোগ এবং স্তন ও কোলন ক্যানসারের জন্য দায়ী। এ ছাড়া রেড মিট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে ৪ দশমিক ৫ আউন্স (১২৮ গ্রাম) বা তার থেকে বেশি পরিমাণে লাল মাংস খান, তাদের হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।


গরু, খাসি, উট, দুম্বা, মহিষ বা ভেড়ার মাংসকে রেড মিট বলে। রেড মিটে প্রচুর পরিমাণে সম্পৃক্ত চর্বি এবং এলডিএল কোলেস্টেরল থাকে।


কোরবানির সময় মাংস খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। দিনে ৭০ থেকে ৭৫ গ্রামের বেশি রেড মিট না খাওয়াই উত্তম। এর সঙ্গে সালাদ এবং সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। কোরবানির সময়টাতে শুধু রেড মিট খেয়ে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে থাকেন। অন্যান্য প্রোটিন-জাতীয় খাবার, যেমন : মাছ, মুরগি, বাদাম ও কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু কোরবানির মাংস দিনে সর্বোচ্চ দুই বেলার বেশি খাওয়া উচিত নয়।


খাবারের তালিকায় মাংসের পরিমাণ বেশি হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। এ জন্য বেশি করে পানি পান করতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আঁশ-জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। বিশেষ করে খাদ্যতালিকায় শাকসবজি এবং দানাদার খাবার রাখার চেষ্টা করতে হবে। হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য দই খাওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি এ সময়টিতে প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন : বার্গার, পিৎজা, শর্মাসহ বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড এবং কোমলপানীয় খাবার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।


পুষ্টিবিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত, হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধিতে রেড মিটের চেয়ে এসব খাবারের অবদান অনেক বেশি। অনেকে কোরবানির মাংস গ্রিলড করে খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ঝলসানোর কারণে রেড মিটে ক্যানসার উৎপাদনকারী যৌগ তৈরি হয়, যা থেকে পরে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এ জন্য মাঝারি মাত্রার তাপে মাংস গ্রিলড করতে হবে। গ্রিলড করার জন্য লিন মিট বা চর্বিহীন মাংস ব্যবহার করতে হবে। প্রতি তিন আউন্স মাংসে সম্পূর্ণ চর্বির (টোটাল ফ্যাট) পরিমাণ ১০ গ্রামের কম, সম্পৃক্ত চর্বি বা স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৪ দশমিক ৫ গ্রামের কম এবং কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৯৫ মিলি গ্রামের কম হলে তাকে লিন মিট বা চর্বিহীন মাংস বলা হয়।


আমাদের শরীরের জন্য লিন মিট বা চর্বিহীন মাংস তুলনামূলক কম ক্ষতিকর। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমেও শরীরের ওপর রেড মিটের খারাপ প্রভাব দূর করা যায়। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে রেড মিটের কারণজনিত রোগের সম্ভাবনা প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে। কোরবানির সময়টিতে অনেকে আলসেমির কারণে শরীরচর্চা করতে চান না। কিন্তু শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে এবং নিয়ম মেনে ব্যায়াম করলে পরিমিত পরিমাণে রেড মিট খেয়েও সুস্থ থাকা সম্ভব।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com