যেভাবে গরুর মাংস খেলে থাকবে না স্বাস্থ্যঝুঁকি
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৩, ১১:১৯
যেভাবে গরুর মাংস খেলে থাকবে না স্বাস্থ্যঝুঁকি
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কোরবানির পশু হিসেবে গরুর চাহিদাই যেহেতু বেশি থাকে, তাই ঈদুল আজহায় বাড়ি বাড়ি গরুর মাংসটাই রান্না হয় বেশি।


যেকোনোভাবেই হোক, বেশ খানিকটা মাংস খাওয়া হয়ে যায়। যাঁরা স্বাস্থ্যের কথা ভেবে গরুর মাংস খাওয়া বাদ রেখেছেন, তাঁরাও এই সময় একটু–আধটু খেয়ে ফেলন। তাই এই গরুর মাংসটাই কীভাবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে খাওয়া যায়। চলুন, জেনে নিই।


১. গরুর মাংস উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে হেটারোসাইক্লিক অ্যামাইনো, পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনের মতো অস্বাস্থ্যকর যৌগ তৈরি করে, অনেক সময় যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার কারণে মাংসের গঠনগত পরিবর্তন হয়। কোমলতা হারিয়ে কঠিন ও সংকুচিত হয়ে যায় মাংস, তখন খেতেও লাগে বিস্বাদ। এ ছাড়া উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় মাংস রান্না করলে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বি ভিটামিন বা থায়ামিন হারিয়ে যায়।


২. অল্প তাপে মাংস রান্না করলে প্রোটিন জমাট বাঁধে ও নরম হয়। এতে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে ও খেতেও হয় সুস্বাদু। সুতরাং অধিক তাপে রান্না না করে অল্প তাপে রান্না করা ভালো।


রান্নার আগে মাংসের বাইরে লেগে থাকা চর্বি কেটে ফেলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানো যায়। রান্নার আগে গরুর মাংসের গায়ে লেগে থাকা চর্বি কেটে ছাড়িয়ে নিতে পারেন। অনেকে মাংস রান্না করার সময় চর্বি কাটার জন্য কিছুটা পানিতে সেদ্ধ করে নেন। এতে চর্বি কাটলেও কিছুটা ভিটামিন ও মিনারেল বেরিয়ে যায়। তাই সেদ্ধ করার আগেই চর্বি কমিয়ে নিন।


৩. গরুর দুটি অংশে চর্বি বেশি থাকে। রাউন্ড অংশ (রানসহ পেছনের দিক), অন্যটি সেরলয়েন (রাউন্ড অংশের পরপরই যে ভাগ)। তাই খাওয়ার সময় এগুলোর চর্বি ফেলে খাবেন।


৪. মাংস খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত আঁশসমৃদ্ধ খাবার ও অ্যান্টিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এই খাবার (যেমন সালাদ, লেবু, টমেটো, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি) সহজে হজম হতে সহায়তা করবে, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও মুক্তি দেবে। এ ছাড়া মাংস খাওয়ার পর কুসুম গরম পানি পান করলে পরিপাকনালি সহজে হজমপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে।


৫. মাংস খাওয়ার পর হজমের জন্য খেতে পারেন লাচ্ছি, বোরহানি, টক দই বা দইয়ের তৈরি খাবার।


৬. মাংস রান্না করার সময় তেল, ঘি, মাখন যত কম দেওয়া যায়, তত ভালো। বরং সিরকা বা লেবুর রস, পেঁপে কেটে ম্যারিনেট করে বা টক দই দিয়ে রান্না করাটা স্বাস্থ্যকর। ফ্যাট কমাতেও এটা সাহায্য করে।


৭. গরুর মাংস বেশি তেল-মসলা দিয়ে কষিয়ে ভুনা না করাই ভালো। এর চেয়ে ভালো ঝোল ঝোল করে রান্না। তবে খাওয়ার সময় ঝোল এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ, মাংসের ভেতরের চর্বি গলে ঝোলের মধ্যে মিশে থাকে। মাংস খাওয়ার সময়, পাশাপাশি শসার রায়তা খেতে পারেন। উপকার পাবেন।


৮. কাবাব বানানোর সময় ডুবো তেলে না ভেজে সামান্য তেল ব্রাশ করে ভেজে নিলে ভালো। আবার গ্রিল করতে তেল ব্রাশ না করে ধনেপাতা, তেঁতুলপানিতে সামান্য অলিভ অয়েল দিয়ে ব্রাশ করতে পারেন। গ্রিল করতে অবশ্যই মাঝারি আঁচে রান্না করবেন।


৯. গরুর মাংস ভালো করে সেদ্ধ করে খেতে হবে। কারণ, লাল মাংসে টিনিয়া সোলিয়াম নামে একধরনের বিশেষ কৃমিজাতীয় পরজীবী থাকে। সঠিকভাবে সেদ্ধ না হলে কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।


১০. ছোট টুকরা করে মাংস রান্না করুন। এতে সহজে শোষিত হবে এবং কম সময়ে ভালো সেদ্ধ হবে। কারণ, মাংস কীভাবে এবং কতক্ষণ রান্না করা হয়, তার ওপর অ্যান্টিডেন্ট ক্ষমতা হ্রাসবৃদ্ধি নির্ভর করে। এ ছাড়া রান্নার পদ্ধতি ভুল হলে পুষ্টিগুণ হারাতে পারে মাংস।


১১. মাংস খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে চা বা কফি খাবেন না। এতে আয়রন শোষণে বাধা দেয়। মাংস খাওয়ার সময় ভিটামিন সি, যেমন লেবু বা প্রোবায়োটিক দই যুক্ত করে খান। এতে সহজে শোষিত হবে।


১২. ঈদের সময় কয়েক দিন গরুর মাংস খাওয়া হয় বলে অন্য প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন। মাংস খাওয়ার পর অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি খাবেন ও হাঁটবেন। রাতের মেনুতে গরুর মাংস না রাখাই ভালো। কারণ, এতে পানির চাহিদা তৈরি করে বেশি।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com