পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোতে সাধারণত নারীরা সাপোর্ট করবে, সেবা দেবে এবং সন্তানদের জিহাদের শিক্ষা দেবে এমনটাই ট্রেন্ড। তবে জঙ্গিরা সাধারণত নারীদের ঘর থেকে বের হওয়ার বিষয়টি সমর্থন করে না। নারী জঙ্গির আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ব্যতিক্রম। বিষয়টি আমরা অনুসন্ধান করছি।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদেরএ কথা বলেন তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, নারীরা সাধারণত স্বামীদের দ্বারা বাধ্য হয়ে জঙ্গিবাদের সাথে যুক্ত হয়। আশকোনায় যে নারী জঙ্গি আত্মঘাতী হয়েছে সে মূলত হতাশা থেকে এই পথ বেছে নিয়েছিল বলে আমরা ধারণা করছি। কারণ তার স্বামী মারা যাওয়ার পর জঙ্গি সুমনের সাথে তার বিয়ে হয়। সুমনের মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়েছিল। সুমনও কিছুদিন আগে গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এখন তার আর কোনো আশ্রয় থাকবে না বলেই সে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের শীর্ষ এই কর্মকর্তা আরো বলেন, এর আগে আজিমপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া নারীরা তাদের জবানবন্দিতে স্বামীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে। তানভীর কাদেরী জানিয়েছিল, জঙ্গিবাদে যুক্ত না হলে সে তাকে ছেড়ে দিতো। সামাজিক ও আত্মীয়স্বজনের কাছে লজ্জিত হওয়ার ভয়ে সে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়। একই রকম তথ্য জানিয়েছিল আরেক শীর্ষ জঙ্গি মারজানের স্ত্রী প্রিয়তিও।
আশকোনার আস্তানায় অস্ত্র ও গ্রেনেড মুজদ করার কারণ জানতে দুই নারী জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কোথা থেকে আনা হয়েছিল এবং তাদের পরিকল্পনা কী ছিল তা মুসাকে না ধরা পর্যন্ত পরিষ্কার করে কিছু বলা যাবে না। প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি বড়দিন উপলক্ষে তারা কোথাও হামলার পরিকল্পনা করেছিল। কারণ সুইসাইডাল ভেস্ট ও গ্রেনেডগুলো রেডি করে রাখা হয়েছিল।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানতে পেরেছে আশকোনার বাসাটি মুসা অফিস কাম বাসা হিসেবে ব্যবহার করতো। সাংগঠনিক কাজে সে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকলেও মাঝেমধ্যে সে ওই বাসায় আসতো। তার সাথে আরও কয়েক সঙ্গী সেখানে আসতো। তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত ১২টায় পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট দক্ষিণখান থানার পূর্ব আশকোনার ৫০ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে এক নারী ও এক কিশোর জঙ্গি নিহত হয়েছে। পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে দুই নারী ও তাদের দুই সন্তান। নিহত নারী জঙ্গির আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে আহত হয় তার শিশুকন্যা। ওই শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বিবার্তা/খলিল/মনোজ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]