শরীয়তপুরে মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৩৬
শরীয়তপুরে মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

শরীয়তপুরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।


১৬ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সকালে কবরের পাশে আগুন দেওয়ার স্পষ্ট আলামত দেখতে পেয়ে বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনাটি শরীয়তপুর সদর উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামে ঘটেছে।


এলাকাবাসী জানায়, আগুন দেওয়া কবরটি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মান্নান খানের। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। তিনি ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি মারা যান। পরে পরিবারের বসতঘরের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী মাহফুজা বেগম ও চার সন্তান দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে নিয়ামতপুর গ্রামেই বসবাস করছেন।


পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহফুজা বেগম কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কবরের পাশে পোড়া ছাই ও আগুনের চিহ্ন দেখতে পান। বিষয়টি দেখে তিনি চিৎকার করলে পরিবারের অন্য সদস্যরা ছুটে আসেন। কবরের ওপর ছাই পড়ে থাকা ও হালকা ধোঁয়া বের হতে দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।


স্থানীয়রা জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মান্নান খান ছিলেন পুরো গ্রামের গর্ব। তাঁর কবরের ওপর আগুন দেওয়ার ঘটনায় পরিবারসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।


শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক আবদুল আজিজ সিকদার জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।


বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মান্নান খানের মেয়ে আফরোজা আক্তার জানান, কারা কী উদ্দেশ্যে এমন কাজ করেছে, তা বুঝতে পারছি না। আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শঙ্কিত। পরে ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবহিত করেছি।


মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহফুজা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা গর্বিত একটি পরিবার। আমার স্বামী এদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছেন। আমার স্বামীর কবরের সঙ্গে এমন অবমাননা সহ্য করতে পারছি না। বিজয় দিবসের আনন্দের মাঝেই এই ঘটনা আমাদের কাঁদিয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।


এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিন বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর আগুন দেওয়ার বিষয়টি তার মেয়ের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে লোক পাঠিয়ে ঘটনার বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হবে।


এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরিবার ও স্থানীয়রা।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com