
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা ফিউচার হাউজিং এলাকায় একটি রিকশার গ্যারেজে হামলা চালিয়ে অটোরিকশা ও নগদ চার লাখ টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে কথিত এক শ্রমিক দল নেতা ফিরোজ ওরফে কান্তা ফিরোজের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মনির হোসেন বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গ্যারেজ মালিক মনির হোসেন বলেন, বসিলা ফিউচার হাউজিং এলাকায় আমার একটি রিকশার গ্যারেজ আছে। গতকাল দুপুরে কান্তা ফিরোজের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জ দেশীয় অস্ত্রসহ গ্যারেজে এসে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি চাঁদা দিতে না চাইলে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে আমি সরে যাই এবং আমাকে তারা সবাই মিলে মারপিট করে। পরে আমার ড্রয়ারে থাকা চার লাখ টাকা পাঁচটি অটো রিক্সা ও তিন লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। পরে আমরা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় আমি বাদী হয়ে কান্তা ফিরোজকে এক নম্বর আসামি করে মোট ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফিরোজ ওরফে ক্যান্তা ফিরোজ নামে এই যুবক শ্রমিক দল নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও কিশোর গ্যাং চালানোসহ নানা অপকর্ম করে আসছে। দখল ও চাঁদাবাজির হাত থেকে রক্ষা পাননি স্থানীয় বিএনপি নেতারাও।
৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মান্নান হোসেন শাহীন জানান, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনে হামলা চালিয়ে তার একটি অফিস জোরপূর্বক দখলে নেয় ফিরোজ। ভুক্তভোগী বিএনপি নেতা গত সপ্তাহে মোহাম্মদপুর থানায় একটি অভিযোগ দেন। এরপর রোববার রাতে তাকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে আপস করার শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সে আবার ওই রুমের তালা ভেঙে নতুন করে তালা লাগিয়ে দেয়।
কথিত শ্রমিক দলের নেতা ফিরোজের একাধিক চাঁদাবাজির একটি অডিওতে শোনা যায়, গত ২৩ তারিখ ফিউচার হাউজিং এলাকায় নির্মাণাধীন এক ভবনের কাজ বন্ধ করে দেন ফিরোজ। এমনকি তার সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী যোগাযোগ করলে তাকে ফিরোজ জানান, শ্রমিক দলের কর্মসূচি আছে। এই উপলক্ষ্যে চাঁদা দিতে হবে।
অপর একটি অডিওতে শোনা যায়, ফিউচার হাউজিং ৪০ ফিট এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাইলিং কাজ বন্ধ করে দেন ফিরোজ। নিজেকে শ্রমিক দলের নেতা দাবি করে তার সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ফিরোজ।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিক বার ফিরোজকে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ দিকে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ফিরোজের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের কিছু তথ্য প্রমাণ তাদের হাতে এসেছে। সেগুলো নিয়ে তারা কাজ করছে। যাদের কাছে এই ধরনের চাঁদা চেয়েছে তারা থানাকে বিষয়টি অবগত করলে এবং মামলা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রিক্সার গ্যারেজে হামলা ও লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. রফিক আহমেদ বলেন, ওই রিক্সার গ্যারেজের মালিক মনির হোসেন থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]