
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে চিহ্নিত চোর-ছিনতাইকারী ও ডাকাতদের সুনির্দিষ্ট মামলার বদলে রাজনৈতিক নাশকতা মামলায় ‘ডেভিল আসামি’ বানিয়ে আদালতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফের বিরুদ্ধে। এতে আইনের ভয়াবহ অপব্যবহার ঘটছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
অভিযোগ রয়েছে, ওসি রাজনৈতিক মামলার সংখ্যা বাড়িয়ে সিএমপি কমিশনারের কাছে বাহবা পেতেই এই কৌশল নিয়েছেন। এমনকি সিএনজি চালককে পর্যন্ত ‘ডেভিল আসামি’ বানানো হয়েছে। ফলে স্থানীয়রা আতঙ্কিত এবং পুলিশ বাহিনীর ওপর আস্থা হারাচ্ছেন।
গত ১৭ আগস্ট রাতে শিকলবাহা থেকে সাজ্জাদ (২১) নামে এক সিএনজি চালককে আটক করে পুলিশ। পরদিন তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা (নং-২১) এ গ্রেফতার দেখানো হয়। অথচ তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য নেই।
এর আগে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার আসামি নুর হোসেন ওরফে আরিফকে গ্রেফতারকৃতকেও রাজনৈতিক মামলায় দেখানো হয়। পুলিশের নথি অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৩টি মামলা রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, একজন চিহ্নিত ছিনতাইকারীকে সুনির্দিষ্ট অপরাধে গ্রেফতার না করে রাজনৈতিক মামলায় পাঠানো মানে অপরাধ আড়াল করা।
এভাবেই নুরুল আমিন ওরফে টিটু ও ছিনতাইকারী আবদুল কাইয়ুম ফাহাদকেও রাজনৈতিক মামলায় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধেও মাদক ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা আগে থেকেই ছিল।
আইনজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, চিহ্নিত অপরাধীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা ব্যবহার করা আইনের অপব্যবহার। এতে বিচারপ্রক্রিয়া দুর্বল হয় এবং প্রকৃত অপরাধ আড়ালে থেকে যায়।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব জিয়া হাবীব আহসান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক মামলার অপব্যবহার বেড়েছে। এতে অপরাধ চাপা পড়ে যাচ্ছে, রাজনৈতিক মামলাও দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়ছে।
এ বিষয়ে ওসি শরীফ বলেন, গ্রেফতারের পর কোন মামলায় দেখানো হয়েছে তা ওসি তদন্ত জানবে। পরে বিষয়টি জেনেছি। তবে কেন রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন “উপরের নির্দেশ” তারপর ফোন কেটে দেন।
সিএমপি সহকারী কমিশনার মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি খোঁজ নেব।
সিএমপি সদর দফতরের উপকমিশনার ফয়সাল আহমেদ জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে সংবাদ করতে পারেন। খোঁজ নেওয়া হবে, যাতে আইনের ব্যত্যয় না ঘটে।
বিবার্তা/জাহেদ/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]