শিরোনাম
জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করতে হবে: আব্দুর রহমান
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:০৬
জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করতে হবে: আব্দুর রহমান
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুনের মূল পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান।


মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’ শীর্ষক আলোচনা ও নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে গৌরব ‘৭১।



‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’ শীর্ষক আলোচনা ও নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন এক নারী মুক্তিযোদ্ধা


আব্দুর রহমান বলেন, জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয়। কিন্তু জিয়উর রহমান ছিল আসল রাজাকার।সে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অনুপ্রেবেশ করেছিল। অনুপ্রেবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের নামে রাজাকারদের সহযোগিতা করেছিল। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুনেরও মূল পরিকল্পনাকারী। তাই আজ সময় এসেছে। খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার এ বাংলার মাটিতে করতে হবে।


জিয়াউর রহমান কৌশলে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেবেশ করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসি দিতে চেয়েছিল।কিন্তু বাংলার জনগণের কারণে তারা ফাঁসি কার্য্কর করতে পারেনি। তবে এই ফাঁসি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আর এর মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে সেইটার প্রমানও করেছিলেন।


তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়াও নিজামি-মুজাহিদদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। তাই তারও বিচার করা প্রয়োজন।


মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন ও আনন্দ বিএনপি বিলিন করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের ওই প্রবীন নেতা বলেন, ৮১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসছিলেন বলেই আজ নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল অসাধ্যকে সাধন করে যাচ্ছেন।


রাজাকারদের বিচার করা কারো পক্ষে সম্ভব ছিলো না জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসায় তাদের বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। এক এক করে রাজাকারদের ফাঁড়ির দড়িতে ঝুলতে হচ্ছে।


বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নাই জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন আমরা সবাই অপশক্তি নির্মূল করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার শপথ গ্রহণ করি।


গৌরব ‘৭১ এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের পরিচানায় অনুষ্ঠানে আগত নারী মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- মুজিব নগর সরকারকে প্রথম গার্ড অব অনার প্রদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম)।



‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’ শীর্ষক আলোচনা ও নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরউপ উপাচার্য ড. মুহাম্মদসামাদ


জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এ দেশ স্বাধীন না করলে এই বাংলাদেশের পতাকা পেতাম না। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান অনেক বেশি। নারীরা মুক্তিযুদ্ধে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তারা স্বামী ও সন্তানদের যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। এছাড়াও অনেকেই অনেকভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।


রাজাকারদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে পুরুষ রাজাকার থাকলেও কোনো নারী রাজাকার নেই।


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসায় এ দেশে রাজাকারদের ফাঁসি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে নারীদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছেন। সুতরাং নারী যে ক্ষমতায়ন পেয়েছে সেই সম্মান ধরে রাখতে হবে।


বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের রক্তমাখাপতাকা রাজাকারদের গাড়িতে তুলে দিয়েছিল বিএনপি। এই পথে বাংলাদেশের মানুষ আর যেতে চায় না।


এ সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি অনেক ছোট ছিলাম। তবে আমার বাবা স্কুল শিক্ষক ছিলেন। সেই সুবাধে আমাদের বাড়িতে বাবা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি ক্যাম্প করে দিয়েছিলেন।


ছোট থাকার কারণে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারেন নাই জানিয়ে সানজিদা খানম বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারি নাই। তবে কলে (টিউবলে) চাপ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পানি পান করিয়েছি।তাই গর্ববোধ করি।


জয় বাংলা স্লোগান জাতীয় স্লোগান ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শুরু করতে হবে। আবার জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করতে হবে। এটা দ্রুত বাস্তাবায়নের আহ্বান জানান তিনি।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, দেশে অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। তারা তালিকার বাহিরে আছেন।


পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে মাত্র দুইজন নারী মুক্তিযোদ্ধা খেতাব পেয়েছেন। আর ৩০০ জন নারী মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রয়েছেন।এটা কোনোক্রমেই সঠিক নয়।তাই নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা করার দাবি জানান তিনি।


সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তারা জীবন বাজি রেখেই নিয়েছিলেন। তাই তাদের বিশেষ সম্মান দেয়ার জন্য গৌরব ৭১ কে ধন্যবাদ জানাই।



‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’ শীর্ষক আলোচনা ও নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকবৃন্দ


তিনি বলেন, একটি অসম্প্রাদায়িক দেশ গড়তে পারলে লাখো শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।


স্বাগত বক্তব্য রাখেন-গৌরব ৭১ এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন-ঢাকা কর অঞ্চলের কর কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)’র স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী প্রমুখ।


আয়োজনটির সহযোগিতায় ছিল শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন ইউএসএ( ইঙ্ক)। এই সংগঠন এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন এর সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রখ্যাত শিল্পী আল আমিন বাবু। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে তিনি গান পরিবেশন করেন।


বিবার্তা/খলিল/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com