
সাম্প্রতিক অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে হত্যার সংখ্যা বেড়েছে বলে প্রতীয়মান হলেও এর পেছনের মূল কারণ নতুন করে অপরাধ বৃদ্ধি নয়, বরং দীর্ঘদিন দমন করা ও রেকর্ডবিহীন থাকা বহু হত্যা মামলা পুনঃনথিভুক্ত হওয়ায় এ চিত্র তৈরি হয়েছে। অপরদিকে দাঙ্গা, চুরি ও ডাকাতির মতো অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৩ মাসে অন্তত এক হাজার ১৩০টি হত্যার মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এর বড় অংশ শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনামলে সংঘটিত হলেও সেসময় রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল ও পুলিশের অনীহার কারণে মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। আগস্ট ২০২৪-এর রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সেসব মামলার রেকর্ড উন্মুক্ত হয়েছে। ফলে হত্যার পরিসংখ্যান তুলনামূলক বেশি দেখালেও তা আসলে দীর্ঘদিনের চাপা পড়া অপরাধের হিসাব।
অপরদিকে, অন্যান্য অপরাধের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
ডাকাতি: ২০২৪ সালের ১ হাজার ৪০৫ থেকে ২০২৫ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১৪-এ।
আইনশৃঙ্খলা ব্যাহতকরণ (দ্রুত বিচার) আইন: ২০২৪ সালের ১ হাজার ২২৬ থেকে ২০২৫ সালে নেমে এসেছে ৬৫১-এ।
দাঙ্গা: ২০২৪ সালের ১২৫ থেকে ২০২৫ সালে ৫৯-এ নেমেছে।
চুরি: ২০২৪ সালের ৮ হাজার ৬৫২ থেকে ২০২৫ সালে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে ৬ হাজার ৩৫৪-এ দাঁড়িয়েছে।
প্রেস উইংয়ের পাঠানো পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, অপরাধের পরিসংখ্যানের এই পরিবর্তন একদিকে দীর্ঘদিন দমন করা মামলার উন্মোচনকে নির্দেশ করছে, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সামগ্রিক উন্নতির প্রতিফলনও ঘটাচ্ছে। পূর্বে রাজনৈতিক দমনপীড়ন ও ভয়ের পরিবেশ থাকায় অনেক ভুক্তভোগী মামলা করতে পারতেন না এবং পুলিশের পক্ষ থেকেও নিরুৎসাহিত করা হতো। বর্তমানে এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। নাগরিকরা ভয়ভীতিমুক্তভাবে মামলা দায়ের করতে পারছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতাপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ফলে একদিকে পুরোনো অপরাধের রেকর্ড যোগ হওয়ায় হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের সংখ্যা বেশি মনে হলেও চুরি, ডাকাতি ও দাঙ্গার মতো অপরাধ কমে যাওয়া সমাজে নিরাপত্তাবোধ জোরদার করেছে। সামগ্রিকভাবে এ পরিবর্তন দেশে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছে।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]