আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের উপায় দরুদ পাঠ
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০২
আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের উপায় দরুদ পাঠ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার শেষ নবী। তিনি সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সর্বশেষ রাসুল। আমরা যদি নবীজিকে ভালো না বাসি, তাহলে আমরা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাবো না।


আল্লাহ তা'য়ালা ইরশাদ করেন, قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰہَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰہُ وَیَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَاللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ হে নবী আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী, দয়ালু। (সুরা আলে ইমরান - ৩১)


আল্লাহ তাআলাকে পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হলো, বিশ্বনবীকে মোহাব্বত করা। তাই তার জন্য হৃদয়ের গভীর থেকে শ্রদ্ধা পোষণ করা এবং তার ওপর দরুদ পাঠ করা আমাদের জন্য কর্তব্য।
পবিত্র কোরআনে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নবীজির প্রতি দরুদ পাঠ করার আদেশ করেছেন। দরুদ-পাঠ একদিকে যেমন নবীজির প্রতি আমাদের আবেগ ও ভক্তির উচ্ছ্বসিত বহিঃপ্রকাশ, অপর দিকে তা মোমিন বান্দার জন্য আল্লাহ পাকের রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়ও বটে।


আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, اِنَّ اللّٰہَ وَمَلٰٓئِکَتَہٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡہِ وَسَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا নিশ্চয় আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরুদ প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবীর জন্যে দরুদ ও সালাম প্রেরণ কর। (সুরা আহজাব - ৫৬)


দরুদের কিছু ফজিলত
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রওজা মোবারক থেকে আমাদের দুরুদের উত্তর দেন। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَيَّ إِلَّا رَدَّ اللَّهُ إِلَيَّ رُوحِي حَتَّى أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ হজরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন আমার উপর সালাম পাঠায়, তখন আল্লাহ আমার রুহ ফিরিয়ে দেন, যাতে আমি তার সালামের উত্তর দিতে পারি। (আবু দাউদ: ২০৪১)


অপর একটি হাদিসের বর্ণিত হয়েছে, একবার দরুদ পড়লে দশটি রহমত বর্ষিত হয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: مَنْ صَلَّى عَلَيَّ وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ عَشْرًا অর্থ: যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন। (মুসলিম: ৪০৮)


দরুদের মাধ্যমে মানুষের পাপ মোচন হয়। যেমন হাদিস শরিফে এসেছে, قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: مَن صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً وَاحِدَةً، صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا، وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطَايَا، وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পড়ে, আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন, দশটি গুনাহ মাফ করে দেন এবং তার মর্যাদা দশগুণ বৃদ্ধি করেন। (নাসাঈ: ১২৯৭) বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করলে কেয়ামতের দিন নবীজির নৈকট্য হাসিল হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاة রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী ব্যক্তি সে-ই হবে, যে আমার উপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করে। (তিরমিজি:৪৮৪)


উপরোক্ত আয়াত ও হাদিস দ্বারা আমরা স্পষ্ট ভাবে দরুদের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারলাম। তাই আসুন! আমরা নিয়মিত নবীজির উপর দরুদ পাঠ করি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে উক্ত আয়াত ও হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন, আমিন।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com