জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে লাশ হয়ে ফিরেছেন কুমিল্লার দাউদকান্দির উপজেলার শাকিল মিয়া।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) ভোরে উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের পেন্নাই গ্রামে তার মরদেহ পৌঁছলে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে দুই বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা গেছিলেন শাকিল।জোহানেসবার্গের নিকটবর্তী পামব্রিজ এলাকায় ব্যবসা করতেন তিনি। কিন্তু গত ২০ জানুয়ারি আসরের নামাজের পর একদল সন্ত্রাসী শাকিলের দোকানে ঢুকে লুটপাট চালায়। প্রতিবাদ শাকিলকে বেধড়ক প্রহার করে ভেতরে রেখেই পেট্রোল ঢেলে দোকানঘরটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা।
পরে স্থানীয় লোকজন শাকিলকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাকিলের মৃত্যু হয়।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) ভোরে শাকিলের মরদেহ পেন্নাই গ্রামে পৌঁছলে গোটা বাড়িই শোকে স্তব্দ দেখা যায়। দেড় বছরের মেয়ে সিনথিয়াকে কোলে নিয়ে শাকিলের স্ত্রী শান্তা আক্তার বিলাপ করছেন। নিহতের বাবা হোসেন মিয়া কথা বলার চেষ্টা করলে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। মা সামছুন নাহার, একমাত্র বোন লিপি আক্তার অঝোরে কাঁদছেন।
শাকিলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাদের কোনো জায়গাজমি নেই। পারিবারিক আয় ও স্বজনদের দয়ায় ৭ লাখ টাকায় দুই বছর আগে শাকিল দক্ষিণ আফ্রিকা যান। সেখানে পৌঁছার পর দোকান কেনার জন্য সুদ আর বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ তুলে আরো ৯ লাখ টাকা আবার পাঠাতে হয়। হোসেন মিয়ার চার সন্তানের মধ্যে শাকিল সবার ছোট। শাকিলের বড় ভাই সোহেল মালয়েশিয়ায় এবং মেজো ভাই শরীফ মিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে খেয়ে না-খেয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। মা-বাবা আর স্ত্রী ভেবেছিলেন বিদেশে ব্যবসা করে শাকিল তাদের অভাব-অনটন দূর করবেন।
শাকিলের বাবা হোসেন মিয়া বলেন, রিকশা চালিয়ে ছেলে মেয়েদের বড় করেছি। এখন আর রিকশা চালাতে পারি না। ‘যখন যে কাজ পাই, সে কাজ করি। তার উপরে ঋণের বোঝা। কী করব বুঝতে পারছি না!
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]