শিরোনাম
মুসলিম স্থাপত্যের অনুপম নিদর্শন প্রবাজপুর শাহী মসজিদ
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ০৯:১৪
মুসলিম স্থাপত্যের অনুপম নিদর্শন প্রবাজপুর শাহী মসজিদ
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে মুঘল আমলে নির্মিত ঐতিহাসিক প্রবাজপুর শাহী মসজিদ। এটি মুসলিম স্থাপত্যের একটি অনুপম নিদর্শন।


সরেজমিন ও বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ১১০৪ হিজরী ১৯ রমজান মোতাবেক ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ২মে তৎকালীন দুলিহার পরগনায় প্রতিষ্ঠিত হয় প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ। সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে তাঁর সেনাবাহিনীর নামাজের জন্য মসজিদটি নির্মাণ করেন। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী হিসেবে এখনও সবার নজর কাড়ে।


মসজিদটি জ্বিনের দ্বারা নির্মিত হয়েছে বলে কথিত থাকলেও এটি মূলত সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে নির্মিত হয়। তার ফৌজদার নবাব নুরুল্লাহ খাঁ মসজিদ নির্মাণে ৫২ বিঘা জমি দান করেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের সুবেদার পরবাজ খাঁর নির্দেশে এ মসজিদ নির্মাণ করেন বিধায় সুবেদার পরবাজ খাঁর নামানুসারে ওই গ্রামের নাম হয়েছে প্রবাজপুর ও মসজিদটি প্রবাজপুর শাহী মসজিদ হিসেবে নামকরণ করা হয়।


দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটির বহির্বিভাগ দৈর্ঘ্য ৫২ ফুট ৫ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৩৯ ফুট ৮ ইঞ্চি। মসজিদটির অভ্যন্তরে ২১ ফুট ৬ ইঞ্চির বর্গাকৃতির একটি নামাজের জায়গা রয়েছে। মসজিদের দেয়ালগুলো ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি থেকে ৭ ফুট পুরু। আর মসজিদের প্রধান দরজাটি ৪ ফুট ৭ ইঞ্চি প্রশস্ত। মসজিদটিতে ৬ ফুট ৯ ইঞ্চি প্রশস্ত একটি বারান্দা ছিল যা এখন আর নেই।


মসজিদটিতে মোট ১০টি দরজা থাকলেও বর্তমানে দরজার নিচের অংশে পাতলা প্রাচীর নির্মাণ করে জানালার আকৃতি করা হয়েছে। তিনটি অলংকৃত মেহরাবও রয়েছে মসজিদটিতে।


১৯৬৫ সালে কালিগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের আলহাজ সোহরাব আলী পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে মসিজদটি নামাজের জন্য উপযোগী করেন। সুলতানি আমলে নির্মিত প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ একটি প্রাচীন এবং প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক অনন্য নিদর্শন। দেশ ও দেশের বাহিরের অনেক পর্যটক এখনও মসজিদটি দেখার জন্য সেখানে ভীড় জমান। তবে মূল সড়ক থেকে মসজিদে যাওয়ার প্রবেশ পথ সরু হওয়ায় দর্শনার্থীদের সেখানে যাতায়াতে বেশ ভোগান্তি হয় বলে জানা গেছে।


মসজিদ কমিটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালিগঞ্জ কলেজের শিক্ষক শেখ মাখলুকাত ইসলাম বলেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদটি নিজেদের দায়িত্ব নেয়ার ফলে আমরা চাইলেই এর কোন সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ করতে পারি না। নির্মাণকালে মসজিদের নামে নুরুল্লা খাঁ যে ৫২ বিঘা জমি দিয়েছিলেন তার মধ্যে মাত্র ৫০ শতক জায়গায় খননকৃত একটি পুকুর ও মসজিদের স্থান ছাড়া বাকি সব জমি বেদখল হয়েছে। মসজিদ নির্মাণের পর থেকে ২৯২ বছর যাবত সম্পূর্ণ জমি মসজিদ কর্তৃপক্ষের দখলে ছিল। তারপর মসজিদের খেদমতকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীরা মসজিদের নামিয় জমি নিজেরা অবৈধ পন্থায় দখলে নেয়। জমি উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা করা হয়েছে।


বিবার্তা/সোহাগ/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com