
ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে রাজশাহী বিভাগে কোরবানির পশু প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর বিভাগের আটটি জেলায় মোট ৪৩ লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে স্থানীয় চাহিদা ২৬ লাখ। ফলে প্রায় ১৭ লাখ পশু রাজধানী, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে।
বিভাগের আট জেলায় কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য ৩০২টি হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। এই হাটগুলোর মধ্যে ১৬১টি স্থায়ী এবং ১৪১টি অস্থায়ী। পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিভাগজুড়ে ২১৩টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমগুলো হাটে উপস্থিত থেকে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, গর্ভবতী গাভি শনাক্তকরণ এবং রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
রাজশাহীর পবা উপজেলার খামারি নাদিরা বেগম বলেন, “আমি গরুটিকে সন্তানদের মতো যত্নে পালন করেছি। কোনো ইনজেকশন বা কেমিক্যাল ব্যবহার করিনি। এখন ঈদকে সামনে রেখে এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকায় বিক্রি করতে চাই।”
তিনি বলেন, ‘আমি এই গরুটিকে ৮ মাস আগে ৬৫ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। শুরু থেকেই সিদ্ধান্ত ছিল কোনো ইনজেকশন বা কেমিক্যাল ব্যবহার করব না। শুধু ঘাস, ভুসি, ভুট্টা আর ঘরে তৈরি দানাদার খাবার খাইয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বড় করেছি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা. অনন্দ কুমার অধিকারী জানান, “এই অঞ্চলে চাহিদার তুলনায় অধিক পশু উৎপাদন হয়েছে, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহ সম্ভব হবে।”
তিনি জানান, গ্রামাঞ্চলে এখনও অনেক খামারি নিজ নিজ ঘরে এক থেকে দুটি করে দেশি জাতের পশু লালনপালন করছেন। পাশাপাশি বড় খামারগুলোতে শাহীওয়াল, সিন্ধি, রেট চিটাগাং, পাবনা ব্রিড এবং মীর কাদিম জাতের গরু কোরবানির জন্য মোটাতাজা করা হচ্ছে।
বিভাগজুড়ে উৎপাদন বনাম চাহিদা-
রাজশাহী: চাহিদা ৩.৮১ লাখ, উৎপাদন ৪.৭৩ লাখ
নাটোর: চাহিদা ২.৭৩ লাখ, উৎপাদন ৫.১৪ লাখ
নওগাঁ: চাহিদা ৩.৮৬ লাখ, উৎপাদন ৭.৮৮ লাখ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাহিদা ১.৩৪ লাখ, উৎপাদন ২ লাখ
পাবনা: চাহিদা ৩.১২ লাখ, উৎপাদন ৬.৪৮ লাখ
সিরাজগঞ্জ: চাহিদা ২.৫৯ লাখ, উৎপাদন ৬.৫৫ লাখ
বগুড়া: চাহিদা ৭.০৯ লাখ, উৎপাদন ৭.৪৬ লাখ
জয়পুরহাট: চাহিদা ১.৯৭ লাখ, উৎপাদন ৩.১৬ লাখ
রাজশাহীর সিটি হাটসহ বিভাগজুড়ে হাট বসতে শুরু করেছে। হাটে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং খামারিরা এখন পশু বিক্রির প্রস্তুতির শেষ ধাপে রয়েছেন। ফলে হাটগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা শুরু হতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে জানান হাট ইজারাদার ও পশু ব্যবসায়ীরা।
সীমান্ত দিয়ে পশু আমদানি বন্ধ থাকায় দেশি গরুর চাহিদা ও দাম বাড়ছে। তবে ব্যাপারী ও খামারিদের মধ্যে দাম নিয়ে টানাপড়েনও দেখা যাচ্ছে।
বিবার্তা/মোস্তাফিজুর/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]