
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার উর্বর মাটি ও এখানকার অনুকূল আবহাওয়া কৃষি কাজের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উল্লাপাড়া উপজেলার কৃষকরা এখন পটল চাষে নতুন করে মনোযোগী হচ্ছেন।
তাদের আন্তরিক পরিশ্রম এবং আধুনিক চাষপদ্ধতির ব্যবহার বদলে দিচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষি চিত্র। অনেক জমিতেই এখন দেখা মিলছে সবুজে সমারহর মাঝে পটল আর লতার খেত।
পটল চাষের বিশেষত্ব হলো এর খরচ কম এবং উৎপাদন বেশি যা কৃষকের কাছে অত্যন্ত লাভজনক । কৃষকরা জানান, ধান বা অন্যান্য প্রচলিত ফসলের চেয়ে পটল চাষে বিনিয়োগ কম লাগে, অথচ বাজারে এর চাহিদা বেশি থাকায় এবং দাম তুলনামূলক ভালো পাওয়ায় লাভের পাল্লা ভারি হয়।
এ কারণেই অনেক কৃষক তাদের ধান চাষের পাশাপাশি পটল চাষকে বেছে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার এক মৌসুমে পটল চাষ করে যে লাভ করছেন, তাতে তাদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরে আসছে। আবার কেউ কেউ একাধিক মৌসুমে পটল চাষ করে আর্থিকভাবে পুরোপুরি স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। পটল সাধারণত বারো মাসই জন্মে অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ার, পটল চাষে ঝুঁকছে কৃষক।
উল্লাপাড়া উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের আব্দুল আলিম এর পুত্র এরশাদ আলী ২৫ শতাংশ জমিতে ও কাচিয়ারচর গ্রামের হেলাল উদ্দিন ১৫ শতক দেশি পটল চাষ করে প্রচুর লাভবান হয়েছেন। চলতি বছর তিনি গত বছরের তুলনায় তিনগুণ জমিতে পটল চাষ করেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এবছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৪ হেক্টর ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১২৫ মে, টন, তবে হাইব্রিড পটল যেখানে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, সেখানে দেশি পটল পাইকারি ৫০ টাকা এবং খুচরা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গ্রাহকরা হাইব্রিড ৩০ টাকা কেজি পটল ক্রয় করতে আগ্রহী না হয়ে, বেশি দাম দিয়ে দেশি জাতের পটল কিনছেন।
কৃষি বিভাগের উদ্ভাবন করা উন্নত জাতের দেশি পটল চাষে কৃষকরা আগ্রহী উঠেছে। দেশি পটল চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছেন। এই দেশি জাতের পটল শুধু এই উপজেলাতে নয়, প্রতিদিন বিভিন্ন উপজেলা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাইকারেরা নিয়ে যাচ্ছে। এখন সারাদেশেই কৃষি বিভাগের উদ্ভাবন করা নতুন জাতের দেশি পটল গ্রাহকদের কাছে সুস্বাদু সবজি হিসেবে গ্রহণ যোগ্যতা পেয়েছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, রফতানিমুখী কৃষির কথা বিবেচনা করে, সম্পূর্ণ জৈবিক উপায়ে একটি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের মাধ্যমে উন্নত জাতের দেশি পটলসহ নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি আবাদ করা হচ্ছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল দেশের বিভিন্ন সুপারসপসহ দেশ -বিদেশে রফতানি করতে পারেন।
বিবার্তা/কাইয়ুম/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]