
চট্টগ্রাম আদালতের বারান্দা থেকে গায়েব হয়ে যাওয়া ১,৯১১টি মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি (কেস ডকেট) অবশেষে পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের কোতোয়ালি এলাকার একটি ভাঙারির দোকানের গোডাউন থেকে এই নথিগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এক চা বিক্রেতাকে আটক করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নথি সংরক্ষণের জায়গার অভাবের কারণে আদালতের কোনো কর্মচারী এগুলো ভাঙারির দোকানে বিক্রি করেছেন।
গত ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালত ভবনের তৃতীয় তলার বারান্দায় রাখা প্রায় দুই বছর ধরে সংরক্ষিত ১,৯১১টি কেস ডকেট চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মফিজুল হক ভুঁইয়া কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, হত্যা, মাদক, চোরাচালান, অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি হারিয়েছে। এই নথিগুলো চট্টগ্রাম মহানগর পিপি কার্যালয়ের এখতিয়ারাধীন অন্তত ৩০টি আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।
সরকারি কৌঁসুলি মফিজুল হক ভুঁইয়া জানান, আদালতের পিপি কার্যালয়ে নথি রাখার জায়গার সংকট দীর্ঘদিন ধরে চলছে। ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে বারান্দায় প্লাস্টিকের বস্তায় পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় নথিগুলো রাখা হয়। আদালতের অবকাশকালীন ছুটির মধ্যে, ১৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নথিগুলো হারিয়ে যায়।
আইনজীবীরা বলছেন, এসব নথি বিচারিক কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হারানো নথিগুলো পুনরুদ্ধার না হলে সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর কার্যক্রম বিলম্বিত হতে পারে এবং বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম জানান, পিপি কার্যালয়ের সামনে রাখা নথি চুরির বিষয়ে তদন্ত চলছে। আটককৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, চুরি হওয়া ৯ বস্তা নথি ভাঙারির দোকানে উদ্ধার হয়েছে। দোকান মালিক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই ঘটনা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় নথি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার দুর্বলতার দিকটি স্পষ্ট করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে নথি সংরক্ষণ প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
বিবার্তা/জাহেদ/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]