মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ময়লার ভাগাড় উপজেলার জেটি রোড এলাকায় অধিগ্রহণকৃত জায়গায় স্থানান্তর নিয়ে ওই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুন, শুক্রবার বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজার সড়কে নাহার পেট্রোল পাম্প এর পাশে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে স্থানীয় বাসিন্দা আসাদ মিয়ার সভাপতিত্বে ও অসিত পালের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়।
আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা অধ্যাপক বিজয় চন্দ্র দেবনাথ, ইয়াদ আলী, হাজী আব্দুস সোবহান, সাইদুল হক, মামলার রীটকারী ফয়েজ আহমদ, জীবেশ চন্দ্র দাস, ইউপি সদস্য মারুফ আহমেদ, বদরুদ্দোহা প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, পৌরসভার ময়লার ভাগারের জন্য জেটি রোডের যে জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে এর আশে পাশে ছোটবড় অনেকগুলো মৎস্য ও গরু ছাগলের খামার, চারটি মসজিদ, একটি ইদগাহ, সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি শ্মশানঘাট ও শিবকালী মন্দির, যোগী সম্প্রদায়ের একটি সমাধিস্থল ও এই অঞ্চলে বসবাসরত হাজার হাজার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায় হাইল হাওরের প্রাকৃতিক মৎস্য আহরণ ও বিক্রয়কেন্দ্র।
পাশাপাশি অনেক মানুষের বসবাস রয়েছে। বিগত কিছুদিন ধরে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ময়লার ভাগাড় জেটি রোডে স্থানান্তরের একটি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। এখানে ময়লার ভাগাড় স্থাপিত হলে এই এলাকার দীর্ঘদিনের অনুকূল ও মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে। বায়ু ও পানি দূষণের মাধ্যমে হাইল হাওরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এ অঞ্চলকে বিপন্ন করে তুলবে।
শ্রীমঙ্গলের সুস্বাদু পানির মৎস্য সম্পদ, জলজ সম্পদ বিনষ্ট হয়ে অর্থনৈতিক ভাবেও এ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শীত মৌসুমে পরিযায়ী পাখিরাও এখানে আর আসবে না। সর্বোপরি এখানে ময়লার ভাগাড় স্থানান্তর একটি আত্মঘাতী পরিকল্পনা বলে আমাদের চিন্তিত করে তুলছে।
এমতাবস্থায় এলাকার হাজার হাজার নিরীহ জনগণ আতঙ্কিত হয়ে ফুঁসে উঠেছে ক্ষোভের পাল্লা। তাই সর্বতোভাবে এলাকার জনগণ আজ এ অঞ্চলে ময়লার ভাগাড় স্থাপন বন্ধে বদ্ধপরিকর। এ জন্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় বলেন,যখন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক থেকে জেটি রোড এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ করার উদ্যোগ নেয়া হয় তখন তিনি ওই সময়ের স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধি ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে জেলা প্রশাসকের নিকট আপত্তি জানান।
কিন্তু পরবর্তীতে কীভাবে এখানে জায়গা অধিগ্রহণ করা হয় তা কেউ জানেন না। পৌরসভা থেকে ময়লা ফেলার উদ্যোগ নেয়া হলে এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং পরে তারা উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করেন। এতে আদালত স্থগিতাদেশ দেন।
তিনি আরও বলেন বর্তমানে কলেজ রোডে যেখানে ময়লার ভাগাড় রয়েছে তার পাশে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও দুটি আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। ময়লার দুর্গন্ধে তারাও যেভাবে দুর্ভোগে কষ্ট পাচ্ছেন জেটি রোডে ময়লার ভাগাড় বানালে ঠিক তেমনি জেটি রোড সহ আশপাশের এলাকাবাসীরা ময়লার দুর্গন্ধে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। তাই আমি এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছি। তিনি শীঘ্রই এই জায়গা পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা সবাই চাই এমন একটি জায়গায় ময়লার ভাগাড় হোক যেখানে কারো কোন অসুবিধা না হয়।
বিবার্তা/কাউছার/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]