বর্ষার নতুন পানির আগমনের সঙ্গে সঙ্গে খাল-বিল, নদ-নদীতে দেখা মেলে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের আনা-গোনা। আর এসব মাছ ধরতে জেলেরা ব্যবহার করছে বাঁশের তৈরি চাই, ঘূর্ণি বা দুয়ারী। চিংড়িসহ ছোট মাছ ধরতে এ চাইয়ের চাহিদা প্রচুর। এ শিল্পকে কুটির শিল্পের সঙ্গে তুলনা করেন হস্তশিল্প কারিগররা।
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী, বৈঠাকাটা বন্দরে বাজারে জমে উঠেছে পাইকারি এসব মাছ ধরার ফাঁদের হাট। সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার, শনি ও মঙ্গলবার এ হাটে হাজার হাজার মাছ ধরার ফাঁদ (চাই) খুচরা ও পাইকারি দরে বিক্রি হয়। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাশেঁ বেধে পায়ে হেটে এবং নৌকায় করে বাজারে নিয়ে আসে কারিগররা। জেলাসহ বরিশালের নিম্নাঞ্চল, ভোলা, পটুয়াখালী, বামনা, চরফ্যাশন, স্বরূপকাঠী,কাউখালী,ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়াসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ যন্ত্র কিনতে আসেন পাইকারি ব্যবসায়ী ও জেলেরা।
নাজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বহু পরিবার চাই, ঘূর্ণি ও দুয়ারী তৈরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। বছরের বর্ষা মৌসুমের ৬ মাস তারা এসব মাছ ধারার ফাঁদ তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। বিভিন্ন জাতের বাঁশ দিয়ে এ ফাঁদ তৈরি করেন তারা। একটি বাঁশ দিয়ে ২০ থেকে ২৫ টি চাই তৈরি করা হয়, তবে একজন শ্রমিক একদিনে ১০ থেকে ১২টি এবং প্রকার ভেদে আরো বেশি বা কম চাই তৈরি করতে পারেন।
বাজারে মান ভেদে ২০টি চাই ১ হাজার ৫ শ টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। এসব ফাঁদ তৈরির প্রতিটি বাঁশ কেনা হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে।
শ্রীরামাকাঠী ইউনিয়নের ভীমকাঠী গ্রামের উজ্জ্বল সিকদার বলেন, এসব চাই আমাদের কাছ থেকে পাইকাররা কিনে দূর-দূরান্তের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায়। এবছর চাইয়ের বাজার দর অন্য বছরের চেয়ে কম হওয়ায় লাভের তেমন আশা দেখছি না।
সেখমাটিয়া ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামের রিতষ মিস্ত্রী জানান, আমাদের এ চাঁই বানাতে কুড়ি প্রতি ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকা খরচ হয় এবং ১ হাজার ৫ শ টাকা থেকে ২ হাজার বা কম বেশি বিক্রি করি। গত বছরের তুলনায় এবছর দাম কম হওয়ায় আমরা লাভের আশা কম দেখছি। বাঁশের দাম প্রতি পিস ৩০০-৪০০ টাকা। বাঁশের দাম গত বছরের তুলানায় এ বছর বেশি।
বিবার্তা/মশিউর/কেআর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]