শিরোনাম
উচ্চ আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত করতে দক্ষ জনশক্তি দরকার
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:৩৫
উচ্চ আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত করতে  দক্ষ জনশক্তি দরকার
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের গ্রিন ভিউ সম্মেলন কক্ষে ‘আগামী দিনের দক্ষতা ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে।


ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড আয়োজনের শেষ দিন বিকেলে এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসেন; কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. আলমগীর; ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (এনএসডিসি) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম খোরশেদ আলম।



অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি এ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।


বক্তারা বলেন, ‘প্রযুক্তির উদ্ভাবনে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকারি বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি লাভ করেছে এবং মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি প্রযুক্তি ও নানা উদ্ভাবনের হাত ধরে পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’


ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্জন সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ‘ইতোমধ্যে পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন এবং নানা উদ্ভাবনের জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি লাভ করেছে। টানা ৪ বার প্রযুক্তি খাতে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ওয়ার্ল্ড সামিট অন দি ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউআইসিএস) পুরষ্কার অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে সরকারী বিভিন্ন সেবাখাতে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হচ্ছে কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে যে শিল্প ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটেছে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো ততটা উন্নত হয়ে উঠেনি। প্রযুক্তির নানা উদ্ভাবন ও উন্নয়নের ফলে শিল্প ক্ষেত্রে খুব দ্রুত অটোমেশন ঘটছে। এতে উৎপাদন ব্যয়ের পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’


বক্তারা আরও বলেন, ‘ বর্তমানে বাংলাদেশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে জনসাধারনের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। ই-গভর্ণমেন্ট এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং অংশগ্রহণের উন্নয়ন সরকার ও তার নাগরিকদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে ধাবিত হওয়ার ফলে শিল্পক্ষেত্রে ধীরে ধীরে মানুষের প্রয়োজন কমতে থাকবে। শিল্প কারখানাগুলো অধিকাংশই প্রযুক্তি ও যন্ত্র নির্ভর হয়ে পড়বে। আর এই উন্নয়নের ধারায় বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে দক্ষ মানব শক্তি গড়ে তোলা প্রয়োজন।’


গোলটেবিল আলোচনায় মূল বিষয় ছিল চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদন ধরণের পরিবর্তন, কর্মক্ষেত্র এবং অর্থনীতিতে প্রভাব, ঝুকিপূর্ণ পেশা ও নতুন পেশাকে সামনে নিয়ে আসা এবং অটোমেশনের ফলে বেকারত্বের ঝুঁকি এড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণ। শিল্পপ্লবের বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে বর্তমান বিশ্ব চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে ধাবিত হচ্ছে যার মূল ধারণা হল শিল্পের অটোমেশন বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার।


বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে শিল্পের অটোমেশনের ফলে যেমন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে তেমন বিলুপ্ত হচ্ছে সনাতন পেশার কর্মসংস্থান। ইতোমধ্যে আশিয়ানভুক্ত দেশসমূহে অটোমেশনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে যার ফলে এ দেশসমূহে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মচ্যুত হয়েছে। সম্প্রতি আইএলও-এর আশিয়ান দেশসমূহে শিল্পের অটোমেশন নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশনায় দেখা যায় প্রায় ৮০ ভাগ বর্তমান পেশার কর্মীরা চাকুরি হারাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনবল উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন নতুন ট্রেডে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।


আলোচকগণ মনে করেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে এ বিষয়টি নিয়ে এখনই সরকারের যথোপযুক্ত বিবেচনার মাধ্যমে নতুন দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা প্রয়োজন।


অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই, বিজিএমই, বেসিস, আইডিইবি, বিডব্লিঊসিসিআই, ব্রাক, আইএলওসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সংস্থা ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/উজ্জ্বল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com