শিরোনাম
তথ্যপ্রযুক্তির চলমান ও ভবিষ্যৎ ধারায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে : পলক
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:৩৪
তথ্যপ্রযুক্তির চলমান ও ভবিষ্যৎ ধারায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে : পলক
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

“একবিংশ শতাব্দীতে তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের সামনে যেমন অফুরান সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে তেমনিভাবে আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন করছে। এসব সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার মাধ্যমে নিয়ত পরিবর্তনশীল তথ্যপ্রযুক্তির বৈশ্বিক বাজারে টিকে থাকতে হলে আমাদেরকে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইবার সিকিউরিটি, বিগ ডাটা এনালাইটিকসহ তথ্যপ্রযুক্তির চলমান ও ভবিষ্যৎ ধারায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’’


বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ জনতা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের সভাকক্ষে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।


আগামী ৬-৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টার (বিআইসিসি)-তে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে তথ্যপ্রযুক্তির এই মহাযজ্ঞ।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মানব সভ্যতার এগিয়ে চলার অন্যতম হাতিয়ার প্রযুক্তি ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতা। আর এই ক্রমাগত উৎকর্ষতায় পৃথিবীকে বারবার নতুন দিগন্তে পৌঁছে দিয়েছে তিনটি আবিষ্কার। ১৭৮৪ সালে পানি ও বাষ্পের মিথষ্ক্রিয়ায় বাষ্পীয় ইঞ্জিনের মাধ্যমে সূচিত হয় প্রথম শিল্প বিপ্লব, ১৮৭০ সালে বিদ্যুত আবিষ্কারের মাধ্যমে আলোকিত হয় বিশ্ব, আর ১৯৬৯ সালে মানুষ কায়িক শ্রমের পরিবর্তে জ্ঞানের বিকাশ ও বিস্তার পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে সংযুক্ত হয় ইন্টারনেটের অসীম জগতে। এই ৩টি শিল্পবিপ্লব সমাজ-সভ্যতায় যেমন উৎপাদনশীলতা দিয়েছে বহুগুণ, তেমনি সৃষ্টি করেছে জীবনমানে স্বাচ্ছন্দ্য। কিন্তু প্রযুক্তির চরম অগ্রগতির ফলে পৃথিবী আজ আগের তিনটি শিল্পবিপ্লবকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এক অসাধারণ গতিতে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ।’



প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৪র্থ এই বিপ্লবে অন্যতম রসদ যোগাচ্ছে ৩য় শিল্পবিপ্লবের সেই ইন্টারনেট। কিন্তু ইন্টারনেটের বহুরূপী ও বিস্তৃত ব্যবহারই আজ আমাদের সামনে হাজির করেছে ইন্টারনেট অব থিংস(আইওটি), ৩ডি প্রিন্টিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা এনালাইটকিস্, মেশিন লার্নিং, রোবোটিকস্, বায়োটেক, ফিনটেক, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো বিষয়গুলো। ফলে এখন মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম থেকে শুরু করে চিন্তাচেতনা যেভাবে বদলে যেতে শুরু করেছে তেমনিভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে পণ্য কিংবা সেবার উৎপাদন, বিপণন ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা। এমনকি পরিবর্তিত হচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিক্রমায় রাষ্ট্রীয় পরিচালন ব্যবস্থাপনাও। তাই এই বিপ্লবে খাপ খাইয়ে নিতে, টিকে থাকতে এবং এগিয়ে যেতে হলে প্রয়োজন সুদক্ষ প্রযুক্তি-কর্মী। প্রয়োজন যুগোপযোগী অবকাঠামো, আন্তরিক সহযোগিতা ও আধুনিক কর্মযজ্ঞ। বাংলাদেশে সে পথেই অগ্রণী পথিক হতে চায়।’


পলক বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত, দীর্ঘ ৯ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্জন ও অগ্রগতি উপস্থাপন করা, আগামীর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং এজন্য দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার লক্ষ্য নিয়ে এ বছরের ৬-৯ ডিসেম্বর, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পঞ্চম বারের মত আয়োজিত হতে যাচ্ছে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭।’


দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি তুলে ধরে পলক বলেন, ‘বিগত নয় বছরে আমরা জনতা টাওয়ারের এই সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ককে যেমন ফাংশনাল করেছি, তেমনি যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে দেশী-বিদেশী ৩৬টি কোম্পানীকে জায়গা বরাদ্দ দিয়েছি। এভাবে সারাদেশে মোট ২৮টি হাইটেক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ করছি। উপজেলা পর্যায় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে উচ্চ গতির ফাইবার অপটিক ক্যাবল পৌঁছাতে বাস্তবায়ন করে চলেছি ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পসহ আরও কয়েকটি প্রকল্প। প্রান্তিক পর্যায়েও কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মাঝে প্রযুক্তি জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে স্থাপন করা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার শেখে রাসেল ডিজিটাল ল্যাবসহ ৬ হাজার ডিজিটাল ল্যাব।’


তিনি বলেন, ‘দেশকে আমদানিকারক গন্তব্যের তকমা মুছে দিয়ে ধীরে ধীরে রপ্তানীকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করতে, হার্ডওয়্যার সংযোজন ও উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ইনোভেশন ডিজাইন এন্ড অন্ট্রাপ্রেনিওরশীপ একাডেমী(আইডিয়া) প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মোবাইল অ্যাপ অ্যান্ড গেমের ট্রিলিয়ন ডলার মার্কেটে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বাস্তবায়ন করা হচ্ছে স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ উদ্যোগ। লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং, এলআইসিটি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তৈরী করা হচ্ছে ৩০০ ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ইঞ্জিনিয়ার।’


বিশাল এই আয়োজনের ব্যয়ের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চমবারের মত আয়োজিত এবারের আয়োজনের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। এতে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীবর্গ আসবেন। অংশ নেবেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।’


সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ৬ ডিসেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭’ এর উদ্বোধন করবেন।’


সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বেসিস, বাক্য এবং ই-ক্যাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/উজ্জ্বল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com