‘তোমরা ইহসান করো, কেননা আল্লাহ ইহসানকারীদের ভালোবাসেন।’
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ০৯:২৪
‘তোমরা ইহসান করো, কেননা আল্লাহ ইহসানকারীদের ভালোবাসেন।’
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ইবাদাতের প্রতি ভালোবাসা মানুষের আগ্রহ বাড়ায় আর শ্রদ্ধা ভয়-ভীতির মাধ্যমে ইবাদাতে নিজেকে বিলীন করে দেওয়া যায়। এটা হল ইহসান।


আর ইসলামের পরিভাষায় এটি হলো ইহসান। ইহসান (আরবি: إحسان‎, প্রতিবর্ণী. ʾiḥsān‎; এহসানও বলা হয়) হল একটি আরবি পরিভাষা, যার অর্থ সৌন্দর্যবর্ধন, সম্পূর্ণতা, পরিপূর্ণতা, চমৎকারিতা, দয়া, সদ্ব্যবহার, অবস্থার উন্নতিকরণ, কোন কিছুকে ভালো করা, উন্নত করা বা সুন্দর করা (আরবি হুসন বা সৌন্দর্য এবং আরবি হাসান বা ভালো থেকে)।


মানব চরিত্রে ইহসান একটি অনন্য গুণ হিসেবে বিবেচিত। ইহসানই মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাতের মর্যাদা দান করেছে। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে ইহসানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ইহসানের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। 


ইহসান অবলম্বনকারী লোকদের আল্লাহ তায়ালা অধিক পছন্দ করেন। কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, ‘তোমরা ইহসান করো। কেননা আল্লাহ ইহসানকারীদের ভালোবাসেন।’ (সূরা বাকারা : ১৯৫) তোমরা এহসান করো’- এখানে সব ধরনের ইহসান অন্তর্ভুক্ত। কেননা এটি বিশেষ কোনো বস্তুর সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়া হয়নি। অতএব সম্পদের ক্ষেত্রে ইহসান, সম্মানের ক্ষেত্রে ইহসান ও শাফায়াতের ক্ষেত্রে ইহসান সবই শামিল। (তাফসিরে সা’দী, পৃ: ৭৪)


সুতরাং ইহসান অবলম্বন করেই মানুষকে ইবাদত করতে হবে। কেননা ইহসানের মাধ্যমেই মানুষ তার প্রতিটি মুহূর্তকে ইবাদতে পরিণত করতে সক্ষম হয়। এ জন্য করণীয় কী?


প্রতিটি মুহূর্তে যে মনোভাব পোষণ করতে হবে


১. মানুষ সব সময় এমন মনোভাব পোষণ করবে, যেন সে তাকে (আল্লাহকে) দেখছে। বান্দা যখনই আল্লাহকে দেখছে ভেবে যে কোনো কাজে সময় অতিবাহিত করবে তখন তার প্রতিটি মুহূর্তই ইবাদতে পরিণত হবে। তবে কোনো প্ররোচনাই তার কাজে অনুপ্রবেশ করতে পারবে না। বান্দার যত চাওয়া তার সবই আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। তখন আল্লাহ তাআলা তার সব চাওয়াই পূর্ণ করে দেবেন।


২. মানুষ তার সময় এমন ভাবে অতিবাহিত করবে, যেন সে আল্লাহকে না দেখলেও আল্লাহ তাআলার সব কর্মকাণ্ড দেখছেন। মানুষ যখন এ মনোভাব পোষণ করবে তখন তার দ্বারা অন্যায় কাজ করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। অন্যায় কাজ থেকে মুক্ত হতে পারলেই মানুষ সব কাজে সফলতা পাবে। আর প্রতিটি মুহূর্তই তার ইবাদত হিসেবে পরিণত হবে।


সুতরাং ইবাদতের সময় অন্তরে ইবাদতের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা। আল্লাহর তাআলঅর প্রতি শ্রদ্ধায় নিজেকে বিলীন করে দেয়া জরুরি।


ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহকে দেখতে পাওয়া কিংবা আল্লাহকে দেখতে না পেলেও আল্লাহ তাআলা দেখছেন এ অনুভূতি হৃদয়ে জাগ্রত করাই হলো ইহসানের সর্বোচ্চ স্তর। যা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অনেক জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন-


‘যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে সৎকাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইবরাহিমের ধর্ম অনুসরণ করে, তার চেয়ে দ্বীনের ব্যাপারে আর কে উত্তম?’ (সুরা নিসা : আয়াত ১২৫)


ইবাদতের চূড়ান্ত পর্যায় হলো ইহসান। ইহসান অবলম্বনকারী আল্লাহর ইবাদতের স্বাদ লাভ করতে সক্ষম হন, অপর দিকে আল্লাহর বান্দাদের প্রতিও তারা থাকেন সহানুভূতিশীল। ইহসান হলো মোমিন জীবনের চরম সাফল্য ও পরম পাওয়া। ইহসানের মাধ্যমে বান্দার প্রতি আল্লাহর করুণার সর্বোচ্চ প্রতিফলন ঘটে। তাই বান্দার উচিত আল্লাহর প্রেমে সর্বতোভাবে বিলীন হয়ে যাওয়া। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার প্রিয় বান্দা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমীন।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com