শিরোনাম
রাজনীতিকদের হাতেই থাকুক রাজনীতি
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৫৫
রাজনীতিকদের হাতেই থাকুক রাজনীতি
শামসুল আরেফিন সেজান
প্রিন্ট অ-অ+

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোর তুলনায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটু ভিন্নভাবেই আলোচিত। এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক ময়দানের পরিচিত মুখগুলো ব্যতীতও ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গন হতে চেনা-অচেনাদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনোনয়ন সংগ্রহের হিড়িক পড়ে যায়।


সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনের বিপরীতে রাজনৈতিক দলগুলো বিক্রি করেছে ১০ হাজারেরও অধিক মনোনায়নপত্র। এদের মাঝে ''কখনোই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না'' এমন ব্যক্তিদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল হতে মনোনয়ন সংগ্রহের বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত-সমালোচিত। এদের মধ্যে রয়েছে দেশবরেণ্য খেলোয়াড়, সঙ্গীতশিল্পী, অভিনেতা, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি। বাদ যাননি বিদেশে কর্মরতরাও।


রাজনীতিতে এই মৌসুমীদের হঠাৎ আগমন জণগণ কিভাবে গ্রহণ করবে তা বোঝা যাবে ভোটের মাধ্যমে। তবে অতীত অভিজ্ঞতা হতে দেখা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা ও প্রতীক ব্যবহার করে মনোনায়নপ্রাপ্ত মৌসুমী নেতারা নির্বাচনে শুধু টিকেই থাকেনি, দিন দিন তাদের আধিপত্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।


১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্যের ১৫ শতাংশ ছিল ব্যবসায়ী। পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তা আরো বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৯, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে তা ছিল যথাক্রমে ৩৫, ৪৮, ৫১ ও ৬৩ শতাংশ।


পেশাজীবীদের মাঝে আইনজীবীরা এগিয়ে থাকলেও সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সদস্যদের। স্বাভাবিকভাবেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের জন্য যোগ্য যে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। হোক সে রাজনৈতিক অথবা অরাজনৈতিক। কিন্তু জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেষ্ট থাকতে হবে যেন মৌসুমীদের অংশগ্রহণে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বিভিন্ন গোষ্ঠী হতে যারা রাজনৈতিক মঞ্চে জায়গা করে নেয় তারা জনগনের স্বার্থের চেয়ে গোষ্ঠীস্বার্থকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বর্তমান সরকারের সময়ে যোগাযোগক্ষেত্রে আমূল ইতিবাচক পরিবর্তনের পরও সম্প্রতি শ্রমিকদের অনিয়ন্ত্রিত আচরণের দায়ভারের আঙ্গুল যখন জনৈক ব্যক্তির দিকে যায় তখন তা সমালোচনার সুযোগ সৃষ্টি করে।


কোনো কোনো গণমাধ্যমে এটাও বলা হয়, ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলে আশ্রয় নেয়া অরাজনৈতিক শ্রমিকনেতারাই এর জন্য দায়ী, যারা জণগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষায় ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তে বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরেন। রাজনীতি যেন কারও শেষ জীবনের বিলাসিতা না হয়।


এক্ষেত্রে প্রার্থী নির্বাচনে এগিয়ে রাখা উচিৎ ছাত্ররাজনীতির ময়দানে নেতৃত্ব দানকারী ব্যক্তিদের, যাদের তারুণ্যের উদ্দীপনা তরুণসমাজ তথা ছাত্রসমাজকে অনুপ্রাণিত করবে।


লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


বিবার্তা/কামরুল/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com