বিদিশা এরশাদ বলেছেন, আমার অটিস্টিক ছেলের ওপর অনেক মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন। এবার অন্তত ক্ষমা দেন। এরিখকে নিয়ে আর নোংরা রাজনীতি করবেন না প্লিজ।
পিতৃহারা এরিক আমার নয়নমনি। বাবার অবর্তমানে মা হিসেবে আমিই তার লিগ্যাল অভিভাবক। সে আমার কাছেই আছে। প্লিজ, তাকে নিয়ে অনেক করেছেন।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে এরিখের চাচা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি ছেলে এরিখের সঙ্গে প্রয়াত এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় অবস্থান করছিলেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছেলের বিপদের কথা শুনে এরশাদের বাসায় ছুটে আসেন তিনি। তখন থেকে এরিখের সঙ্গে সেখানেই আছেন বিদিশা এরশাদ।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কাল থেকে আমরা মা-ছেলে একত্রে আছি। তবে আমাদের এক প্রকার অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কাউকে এখানে আসতে দেয়া হচ্ছে না। গণমাধ্যম কর্মীরা আমার ও এরিখের সঙ্গে দেখা করার জন্য দিনভর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। আমার লোকজনকেও বাধা দেয়া হচ্ছে।’
কারা বাধা দিচ্ছে জানতে চাইলে বিদিশা বলেন, ‘আর কারা, এরিখের চাচা জিএম কাদের। তার নির্দেশে কাউকে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। নিচে পুলিশও সাংবাদিকদের একথা বলেছেন। আমরা মা-ছেলে একপ্রকার অবরুদ্ধ, বন্দি জীবন কাটাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এরিখের বৈধ অভিভাবক আমিই। পিতার মৃত্যুর পর মা বেঁচে থাকতে চাচা কখনো অভিভাবক হতে পারে না। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে চাচা কি আমার ছেলেকে এসে দেখাশোনা করতেন? বাসা থেকে একবেলা খাবার পাঠিয়েছেন। নাকি চাচা-চাচি তাকে বাসায় নিয়ে খাইয়েছেন? কোনটাই করেনি। বরং তার ওপর মানসিক অত্যাচার করেছেন। তাদের আশকারা পেয়ে ড্রাইভার আউয়াল তার গায়ে হাত তুলেছেন। অনাদরে অবহেলায় আমারে ছেলের জীবন বিষিয়ে ওঠেছে। এরশাদ জীবিত থাকলে তারা কি সেটা করতে পারতেন?’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার ছেলে অটিস্টিক। সে নিজে নিজে সবকিছু করতে পারে না। এই সুযোগটা তারা নিয়েছে। আমার ছেলেকে না খাইয়ে, ভয় ভীতি দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে খেপিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে কথা বলানো হয়েছে। তাকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয়নি। ঘরে আটকিয়ে যেভাবে মানসিক টর্চার করা হয়েছে তা শুধু অমানবিক নয়, তা নজিরবিহীন ঘটনা। আর যা কিছু হয়েছে সবকিছু তার চাচার নির্দেশে হয়েছে। আমার ছেলে আমাকে সবকিছু বলে দিয়েছে। এরিখ চাচার জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চায়, একই সঙ্গে চাচার শাস্তিও চায়।’
জিএম কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিদিশা বলেন, ‘আমাকে দুর্বল মা ভাববেন না। কোনো অপশক্তি আমার কাছ থেকে এরিখকে আর কেড়ে নিতে পারবে না। তারপরও যদি বাড়াবাড়ি করেন তাহলে আমি শিশু নির্যাতন মামলা করে আপনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’
এ বিষয়ে কথা বলতে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিদিশার বক্তব্য সত্য নয়। তাকে কে, কীভাবে, কোথায় অবরোধ করে রেখেছেন? আসলে আমার বড়ভাই মৃত্যুর আগে এ বিষয়ে একটা নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এরিখকে কে কে দেখাশোনা করতে পারবেন, কে কে পারবেন না তার একটা গাইডলাইন আছে। আমি এসব বিষয়ে পরে প্রেস রিলিজ দিয়ে পরিষ্কার করব। এরিখ নিজে বলেছে, তার মা যেন তার কাছে না আসেন।’
বিবার্তা/এরশাদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]