শিরোনাম
নতুনদের মালয়েশিয়া ভ্রমণ টিপস
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০১৬, ০৮:২৯
নতুনদের মালয়েশিয়া ভ্রমণ টিপস
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশিদের বিদেশ ভ্রমণের আগে যে কয়টা দেশের নাম উঠে আসে সেগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া অন্যতম। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেন। যারা মালয়েশিয়া ভ্রমণের প্ল্যান করছেন তাদের ভ্রমন যাতে সহজ এবং সাশ্রয়ী হয় সেদিক বিবেচনা করেই আজকের এ টিপস।


● মালয়েশিয়া ভ্রমণ করতে হলে প্রথমে যা করতে হবে তা হচ্ছে ভিসা। মালয়েশিয়ার ভিসা পেতে অনেক দেশের তুলনায় অনেক সহজ। আপনাকে যা করতে হবে তা হল প্রথমে ভিসার জন্য যেসব রিকোয়ারমেন্ট দরকার, তা যোগাড় করা, এসবের মধ্যে আপনার গত তিন মাসের ব্যাংক স্ট্যটমেন্ট, (স্টুডেন্ট হলে ব্যাংকে ৫০-৬০ হাজার টাকা রেখে একটা স্টেটমেন্ট নিয়ে নিন)।


● যাওয়া-আসার প্লেন টিকেট (বিলাসী না হলে এয়ার এশিয়ার টিকিট কাটতে পারেন, রিটার্ন টিকিট ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে, অনেক সময় প্রমোশনাল প্রাইস পেলে ৬-৮ হাজার টাকায়ও পেতে পারেন। প্লেনের ভেতর ফ্রী কোন খাবার পাবেন না, যেটা পাবেন সেটা খেতে হলে এক্সট্রা পে করতে হবে। টাকা বাঁচাতে চাইলে গুড়-মুড়ি, আর একটা ড্রিংকস নিয়ে উঠতে পারেন, টিকিটের জন্য এয়ার এশিয়ার ওয়েব সাইটে নিয়মিত চোখ রাখতে পারেন।



● আর সাচ্ছন্দে যেতে চাইলে সবচেয়ে ভাল সিংগাপুর এয়ারনাইন্স। এক্ষেত্রে বাজেট হবে দ্বিগুণ)।


● পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজ ছবি। এসব এক করে ভিসা ফি ৩০০ টাকাসহ গুলশানস্থ মালয়েশিয়ান হাই কমিশনে সাবমিট করুন। সবকিছু ঠিক-ঠাক থাকলে ৩ (তিন কার্যকরী দিবস) দিন পর গিয়ে ভিসা নিয়ে আসুন। এ ছাড়াও ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যেতে টিকিট কাটতে পারেন ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার ওয়েজ, বাংলাদেশ বিমান ও মালয়েশিয়ান এয়ারে। সময়ভেদে টিকেটের দামের কম-বেশি হয়। ● যাওয়া-আসার টিকিট মিলিয়ে ইউনাইটেড এয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজের টিকিটের দাম পড়বে ২২ হাজার ৫শ’ থেকে ২৬ হাজার টাকা। বাংলাদেশ বিমানের টিকিট পাবেন ২৪ হাজার ৫শ’ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। মালয়েশিয়ান এয়ারের টিকিটের দাম ২৭ হাজার থেকে ৩৬ হাজার ৫শ’ টাকা।


● ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর পৌঁছতে সময় লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টা। বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সময়ে পার্থক্য ২ ঘণ্টা। তাই গভীর রাতে এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর ঝামেলা এড়াতে রাতের বিমানে রও না দেয়াই উত্তম।


● হোটেল মালয়েশিয়ার সব হোটেলেই চেক ইন করার সময় দুপুর ১২টা। তাই সকালে কুয়ালালামপুর পৌঁছে হোটেল খুঁজতে বেরুলে পড়তে পারেন ঝামেলায়। তাই আগেই হোটেল বুকিং করে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। অসংখ্য হোটেলের মধ্যে টাইমস স্কয়ার, পার্ক রয়্যাল, ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল, রয়্যাল বেনতান ইত্যাদি পর্যটকদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। টাইমস স্কয়ার ও পার্ক রয়্যালে সকালের বুফে নাস্তাসহ দিনপ্রতি খরচ পড়বে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।


● আর ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল ও রয়্যাল বেনতানে ছয় হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই থাকতে পারবেন। পরিবার নিয়ে গেলে নিতে পারেন টাইমস স্কয়ারের স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টগুলো। রান্না-বান্নাসহ সকল ঘরোয়া পরিবেশই পাওয়া যাবে এই অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে। তবে দিনপ্রতি গুনতে হবে ১৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।


● এছাড়া ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল ও রয়্যাল বেনতানে পাবেন সর্বোচ্চ চারজনের প্যাকেজ, খরচ ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে এই দুই প্যাকেজে নেই সকালের নাস্তার ব্যবস্থা।


● মালয়েশিয়ায় আছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে একটি হল কুয়ালামপুরের কাছেই পাহাঙ্গে অবস্থিত গেনটিন হিল রিসোর্ট। ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য পরিচিত তিতিওয়াঙ্গসা পাহাড়ি অঞ্চলের এই রিসোর্টে পাবেন থিম পার্ক, কেবল কার, ক্যাসিনো ইত্যাদি।


● কুয়ালালামপুরের মধ্যেই আছে টুইন টাওয়ার নামে খ্যাত প্যাট্রোনাস টাওয়ার। ১৯৯৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু টুইন টাওয়ার। দুই টাওয়ারের মাঝের ব্রিজকে বলা হয় স্কাই ব্রিজ। ৫০ রিঙ্গিত বা ১২শ’ টাকার বিনিময়ে দর্শনার্থীরা উঠতে পারবেন এই স্কাইব্রিজে।


● মালয়েশিয়া গিয়ে লাঙ্কাউই না গেলে হয়ত সমস্ত খরচই বৃথা। কুয়ালালামপুর থেকে ৪১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকত অঞ্চল আন্দামান সমুদ্রের ১০৪টি দ্বীপের সমষ্টি। কি নেই এখানে, কেবল কার, ঝরনা, সমুদ্রের নিচ দিয়ে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আরও কত কি।


● একটু ভিন্ন স্বাদের জন্য একটি নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের ভেতর। সেখানেও আছে বাদুরের গুহা, ঈগলের গুহা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান।


● কুয়ালালামপুর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দূরেই আছে আরেকটি পর্যটন এলাকা পেনাঙ্গ। এখানকার মূল আকর্ষণ কেবল ট্রেন। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আট রিঙ্গিত আর ছোট ও বৃদ্ধদের জন্য চার রিঙ্গিতের বিনিময়ে এই ট্রেনে চড়ে যেতে পারবেন পেনাঙ্গ পর্বতে।


● আর মালয়েশিয়ার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চলে যেতে পারেন মালাক্কা সিটি। কেনাকাটার জন্য যেতে পারেন প্যাভিলিয়ন, টাইমস স্কয়ার, বিবি প্লাজা, সানওয়ে পিরামিড মার্কেট ইত্যাদি শপিং মলগুলোতে। পৃথিবীর সবগুলো ব্র্যান্ডের পণ্যই পাবেন এই মার্কেটগুলোয়। এছাড়া মালয়েশিয়ার স্থানীয় পণ্যগুলোও গুণগত মান সম্পন্ন, দামও ক্রয়সীমার মধ্যেই।


● ইলেক্ট্রনিকস পণ্য কিনতে চাইলে অবশ্যই যেতে হবে ল-ইয়েট প্লাজা। খাওয়া-দাওয়া সবধরণের ফাস্টফুড চেইনের স্বাদ নিতে পারবেন মালয়েশিয়ায়। কমতি নেই স্থানীয় খাবারের। সকালের নাস্তায় দুই রিঙ্গিতের বিনিময়ে খেতে পারেন চানারুটি। দুপরের খাবারে খেতে পারেন মিক্সড ফ্রাইড রাইস নাসিগরেঙ্গ, খরচ পড়বে সাত থেকে আট রিঙ্গিত। এছাড়াও আছে পাকিস্তানি ও বাঙালি রেস্তোরা। পাবেন কাচ্চি বিরিয়ানি, তন্দুরি চিকেন, কাবাব ইত্যাদি। ২০ রিঙ্গিত বা ৫শ’ টাকাতেই ভরপেট খেতে পারবেন এই রেস্তোরাগুলোয়। ডেজার্ট হিসেবে বেছে নিতে পারেন সিক্রেট রেসিপির কেক। তাহলে আর দেরি কেন ঘুরে আসুন অপরূপ সুন্দর দেশ মালয়েশিয়া।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com