শিরোনাম
বান্দরবানের স্বর্ণমন্দির খুলছে ১৬ নভেম্বর
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:০০
বান্দরবানের স্বর্ণমন্দির খুলছে ১৬ নভেম্বর
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার নয় মাস পর বান্দরবানের অন্যতম পর্যটনস্পট বৌদ্ধ ধাতুজাদী স্বর্ণমন্দিরে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কাল ১৬ নভেম্বর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বৌদ্ধধাতু স্বর্ণমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা জোত মহাথেরো উচহ্লা ভান্তে। গত রবিবার রাত পৌনে নয়টায় বান্দরবান কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব শেষে মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন।


সভায় অন্যদের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ শফিকুর রহমান, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার রায়সহ প্রশাসন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।


জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জের ধরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এ প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা রক্ষায় চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি স্বর্ণমন্দির ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপিসহ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসে দর্শনীয় স্থানটি খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান। ১৬ নভেম্বর থেকে আবারো পর্যটকরা স্বর্ণমন্দির স্থানটি ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি পবিত্রতা রক্ষায় পর্যটক, দর্শনার্থীদের সতর্ক হবার আহবান জানানো হয়েছে।


প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দর্শনীয় স্বর্ণ মন্দিরের নিরাপত্তায় পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি ৫টি সিসি ক্যামেরা বরাদ্দ দিয়েছেন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা এবং নিরাত্তায় প্রতিদিন ৫ জন করে পুলিশ সদস্য দর্শনীয় স্থানে নিয়োজিত থাকবে।


প্রায় ষোল শ ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের চূড়ায় স্থাপত্যের অপূর্ব নির্দশন বৌদ্ধ ধাতুজাদী স্বর্ণমন্দির। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি তীর্থস্থান হলেও পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থান। বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীসহ ১৪ সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছেও বৌদ্ধধাতু স্বর্ণ জাদী পবিত্র স্থান।


জেলা শহরের মাত্র চার কিলোমিটার দূরে বালাঘাটা এলাকায় গড়ে উঠেছে বুদ্ধধাতু স্বর্ণ জাদী। যাকে সংক্ষেপে লোকজন জাদি বা স্বর্ণমন্দির বলেই চেনে। প্রতিদিন মন্দিরের দর্শনার্থী প্রথম ১০ জনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। আর দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে স্বর্ণমন্দির স্পটে ফ্রি ওয়াই ফাই সুবিধাও চালু রয়েছে।


এর নির্মাণশৈলী, কারুকার্য, স্বর্ণখচিত অবকাঠামো যে কারু মন কাড়ে। লাখ লাখ ধর্মীপ্রাণ নারীপুরুষের কাছে এটি যেমন পবিত্র স্থান, তেমনি এটি পর্যটকদের কাছেও অত্যন্ত দর্শনীয় স্পট হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ধর্মানুরাগী ও পর্যটকদের একশ তেইশটি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় বৌদ্ধ জাদীতে। মিয়ানমার, শ্রীলংকাসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র থেকে আনা শ্রমিক এবং শিল্পীরা নির্মাণ করেছে এই বৌদ্ধধাতু স্বর্ণজাদি। এটি নির্মাণে সময় লেগেছে প্রায় এক বছর। জাদিতে রয়েছে ছোটবড় প্রায় শতাধিকেরও বেশি বৌদ্ধমূর্তি। এসব মূর্তির কিছু স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করা হলেও বেশির ভাগ আনা হয়েছে শ্রীলংকা, চীন, মিয়ানমার, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে।


সূত্র মতে, ভ্রমণপিপাসু কিছু পর্যটক বৌদ্ধ মূর্তিগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন অশোভন ভঙ্গিতে ছবি তোলে এবং তা ফেসবুকে আপলোড করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং বৌদ্ধ ভান্তেদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা এবং সহিংসতা এড়াতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে স্বর্ণ মন্দিরে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেন বৌদ্ধ ধাতু স্বর্ণমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা উপঞঞা জোত মহাথেরো উচহ্লা ভান্তে। তবে পুজারিরা অনুমতি সাপেক্ষে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারতেন।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com