শিরোনাম
এশিয়ার বৃহত্তম সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক
প্রকাশ : ০৯ মে ২০১৭, ০৮:২৫
এশিয়ার বৃহত্তম সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে ৩৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সীতাকুণ্ডের ঐতিহাসিক চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে দেশের প্রথম এবং এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন অবস্থিত। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রাণিকুলের অভয়ারণ্য গড়ে তোলা এবং চিত্তবিনোদনের জন্য বন বিভাগ এ পার্ক প্রতিষ্ঠা করে। বিরল প্রজাতির গাছপালা, সৌন্দর্যবর্ধক ফুলের বাগান, কৃত্রিম লেক, পিকনিক স্পট, গ্রিন হাউস এবং বিরল প্রজাতির পশুপাখি এ পার্কে সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়াও এখানে রয়েছে তিনটি প্রাকৃতিক ঝরনা এবং ঐতিহাসিক চন্দ্রনাথ মন্দির, যেগুলো দর্শকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।


১৯৯৬ একর পার্কটি দুই অংশে বিভক্ত। এক হাজার একর জায়গায় বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ৯৯৬ একরজায়গা জুড়ে ইকোপার্ক এলাকা। ৩টি পিকনিক স্পট, ৮টি বিশ্রাম ছাউনি সম্বলিত ইকোপার্কে রয়েছে- মেছোবাঘ, ভালুক, মায়াহরিণ, বানর, হনুমান, শুকর, বনরুই, সজারু, বনমোরগ প্রভৃতি পশু। দাঁড়াশ, গোখরা, লাউডগা, কালন্তি প্রভৃতি সাপ থাকলেও শীতকালে বের হয় কম।


পাহাড়ের মাঝে সৃজিত হচ্ছে ফুল ও ফলের গাছের বাগান যাতে পশুপাখি তার খাদ্য ও আবাসস্থল ফিরে পাবে। দুর্লভ কালো গোলাপসহ ৩৫ প্রকার গোলাপ, জবা, নাইট কুইন, লিলি, স্থল পদ্ম, মোসান্ডা, রংগন, রাধা চুঁড়া, কামেনি, কাঠ মালতি, এলামেন্ডা, বাগান বিলাস, হাসনা হেনা, গন্ধরাজ, ফনিকা মিলে রয়েছে ১৫০ জাতের ফুল। শাল, সেগুন, গর্জন, চাম্পা, আমলকি, আম, জাম, হরিতকি প্রভৃতি কাঠ, ফল ও ঔষধি বৃক্ষ আর লতাগুল্ম মিলে আছে ১৫’শ প্রজাতির গাছগাছালি। বিরল প্রজাতির সাইকাস পার্কটিকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। আছে অত্যাধুনিক গ্রীনহাউস স্থাপন করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির দৃষ্টিনন্দন ১০০টি অর্কিড আছে।


বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের উত্তরে শুধু পাহাড় আর পাহাড়। এ যেন পাহাড়ের স্রোত কেবলই বয়ে চলেছে হাট হাজারী, মন্দাকিনী ও ফটিকছড়ি পর্যন্ত। পর্যটকদের সুবিধার্থে পাহাড়ের চূড়ায় কয়েকটি পিকনিক কর্ণার, বিশ্রামাগার, টয়লেট, পানির জলের ব্যবস্থা।



কৃত্রিম হৃদ: সহস্রধারা ও সুপ্তধারা হতে বহমান জলকে কৃত্রিম বাঁধ তৈরির মাধ্যমে গড়ে উঠবে লেক, যার পানিতে বোটে ঘুরে বেড়াবে পর্যটকরা। নৌবিহারের সময় পাখির কাঁকলি শুনতে শুনতে লেকের পাড়ে দেখা যাবে বানর, হনুমান, ভালুক গাছ থেকে গাছে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোথাও বা একপাল মায়া হরিণ লেকের পাড়ে নেমে এসেছে পানি পান করার জন্য।


চন্দ্রনাথ মন্দির: পার্কের ডিসপ্লে ম্যাপটি হতে ধারণা নিয়ে গাড়িতে অথবা পায়ে হেঁটে অনায়াসে পৌঁছে যাওয়া যায় পাঁচ কিলোমিটার চন্দ্রনাথ শিব মন্দিরে। মন্দিরে যাওয়ার পূর্বে আঁকাবাঁকা রাস্তায় এক পলকে চোখ পড়বে পাহাড়ে জন্মানো প্রাকৃতিক হৈমন্তি, লেনটোনা ও সোনালুর বাহারী ফুল অথবা দুরে সাদা কাঁশ ফুলের সমারোহ।


এরই মাঝে যখন পর্যটকরা ঠিক চন্দ্রনাথ শিব মন্দিরটির নীচে এসে উপস্থিত হবে, তখন তাদের দুইশত বায়ান্নটি সিঁড়ি বেয়ে মন্দিরে উঠতে হবে। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে মোট ষোলশত সিঁড়ি বেয়ে শিব মন্দিরে উঠতে হয়।


প্রবেশ মূল্য: বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্কে প্রবেশ মূল্যে জনপ্রতি ১০ টাকা। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ জনের জন্য মাত্র ১০০ টাকা প্রবেশ ফি দিতে হবে। এক্ষেত্রে আসার আগে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইর্কোপার্ক কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে হবে।


যাবেন কিভাবে: চট্টগ্রাম শহর থেকে বাস, মেক্সী, টেক্সীতে ৩৭ কি.মি. উত্তরে এলে কিংবা সীতাকুণ্ড থেকে ২কি.মি. দক্ষিণে ইকোপার্ক। সীতাকুণ্ড থেকে পার্ক গেইট পর্যন্ত রিক্সা কিংবা টেক্সীতে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা ভাড়া নেবে। সিএনজি টেক্সী নিয়ে পাহাড়ের উপরেও যাওয়া যায় তবে ভাড়া একটু দর-দাম করে নিলেই ভালো। আর নিজস্ব গাড়ি থাকলেতো কথা নেই।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com