১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরা ও কেনা-বেচা বন্ধ
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৪৭
১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরা ও কেনা-বেচা বন্ধ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ’ কার্যক্রম। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত করা ও কেনা-বেচা নিষিদ্ধ থাকবে। সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


মূলত প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ আহরণ বন্ধ করার জন্য ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান’ বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। গত বছরের মতো এবারেও ৩৮টি জেলায় এই অভিযান বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জেলা হচ্ছে- চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, মাদারিপুর, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ।


ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে প্রতিবেশী দেশের মৎস্য আহরণকারী নৌকা কিংবা ট্রলার যেন এ সুযোগে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য গভীর সমুদ্রে ও সীমান্ত এলাকায় ইলিশ পাচার বন্ধ করার জন্য আগের চেয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এ বিষয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, বিজিবি, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মাঠ প্রশাসন মৎস্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করবে। সেই সমন্বয়ের ভিত্তিতে অভিযান বাস্তবায়ন করবে। অতি সংবেদনশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও নৌ-পুলিশ অস্থায়ী ক্যাম্প করে অভিযান পরিচালনা করবে।


সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২২ দিন ড্রেজিংসহ নদী থেকে বালু উত্তোলনের কাজও বন্ধ থাকবে। সে জন্য জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। এ ২২ দিনের জন্য বেশ কয়েকটি জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সংযুক্তি দেওয়া হচ্ছে ।


আগামী ২২ দিনের অভিযান সফল করার জন্য মৎস্য অধিদফতর কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সমন্বয় সেল গঠন করবে। একই মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম মনিটর করার জন্য ৫টি বিভাগীয় মনিটরিং টিম গঠন করা হচ্ছে। ইলিশ সমৃদ্ধ এলাকায় অভিযানে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সাময়িকভাবে সংযুক্ত করা হচ্ছে।


ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময় সুন্দরবন ও উপকূলীয় বনাঞ্চলে জেলেদের মাছ ধরার পারমিট যেন না দেওয়া হয় এ জন্য বন অধিদফতরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


এ ছাড়া ঢাকার বাজারে যেন কোনো ধরনের ইলিশ মাছ কেনা-বেচা না হয় তার জন্য একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হচ্ছে। ঢাকার সদরঘাটে ও সোয়ারি ঘাটে সভা করা হবে। একই সঙ্গে লিফলেট বিতরণ, ব্যানার টানানো হবে বলে সভায় নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ঢাকা শহরে সব ধরনের মাছের বাজার, আড়ত ও চেইন শপগুলোতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সভায় বলেছেন, জেলে ভাইদের বোঝাতে হবে এ ইলিশ তারাই ধরবেন। তারাই বিক্রি করবেন। তারাই লাভবান হবেন। ইলিশ মজুদ করতে বরফ খুব গুরত্বপূর্ণ। তাই মাঠ প্রশাসনকে বরফ কলগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে। সমাজের কিছু অসাধু ও অতি মুনাফালোভী ক্ষমতাবান ব্যক্তি দরিদ্র অসহায় জলেদের এ নিষেধাজ্ঞার সময়ে মাছ ধরতে ব্যবহার করে। এদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে।


এদিকে সভায় মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ উল্লেখ করেছেন, ইলিশ অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ‘জো’তে ডিম ছাড়ে। ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বরের মধ্যে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা দুটি জো বিদ্যমান থাকায় এ সময়ে সর্বোচ্চসংখ্যক ইলিশ ডিম ছাড়বে।


সভায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, চাঁদপুর জেলায় প্রায় ৭০ কিলোমিটার মেঘনা নদী। চাঁদপুর থেকে হাইমচর নৌপথে যেতে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট সময় লাগে। যে-সব নৌযান দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয় তা দিয়ে জেলে নৌকা ধাওয়া করে ধরা যায় না। ফলে অভিযানের কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া সম্ভব হয় না। এ জন্য তিনি হাইমচরে অভিযান পরিচালনার জন্য একটি স্পিড বোট দেওয়ার অনুরোধ জানান।


সভায় বরগুনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানান, জেলেরা বনের ভেতর মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে অবৈধভাবে ইলিশ আহরণ করে থাকে। আর বরগুনার পুলিশ সুপার বলেন, যে স্পিড বোট ব্যবহার করা হয় তা দিয়ে মোহনায় অভিযান পরিচালনা ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি অভিযান শুরুর আগে জেলেদের ভিজিএফ বিতরণের প্রস্তাব দেন।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com