শিরোনাম
যে ৩ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০১৭, ১২:৫১
যে ৩ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ইতোমধ্যেই গাইবান্ধার জামায়াতের সাবেক সাংসদ আব্দুল আজিজসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ঘোষণা দিয়েছেন আদালত। তিনটি গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে এ রায় দেন যুদ্ধপরাধ ট্রাইবুনাল।


প্রথম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ৯ অক্টোবর সকালে আসামিরা পাকিস্তানের দখলদার সেনাবাহিনীর ২৫-৩০ জনকে সঙ্গে নিয়ে গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন মৌজামালি গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ, নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে আটক, নির্যাতন ও অপহরণ করে। পরে তাদের দাঁড়িয়াপুর ব্রিজে নিয়ে গিয়ে একজনকে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যা করে এবং বাকিদের ছেড়ে দেয়। আসামিরা আটকদের বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করেন।


দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে আসামিরা সুন্দরগঞ্জ থানার মাঠেরহাট ব্রিজে পাহারারত ছাত্রলীগের নেতা মো. বয়েজ উদ্দিনকে আটক করে মাঠেরহাটের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করতে থাকে। পরদিন সকালে আসামিরা বয়েজকে থানা সদরে স্থাপিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তিন দিন আটক রেখে নির্যাতনের পর ১৩ অক্টোবর বিকেলে তাকে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ মাটির নিচে চাপা দেয়।


তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ১০ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত আসামিরা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সুন্দরগঞ্জ থানার পাঁচটি ইউনিয়নের নিরীহ-নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের ১৩ জন চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবৈধভাবে আটক করে। তাদের তিন দিন নির্যাতন করার পর পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পের কাছে নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে এবং তাদের মরদেহ মাটিচাপা দেয়। সেখানে ওই শহীদদের স্মরণে একটি বধ্যভূমি নির্মিত হয়েছে।



অভিযোগপত্রে বলা হয়, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজ মিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চার দলীয় জোটের অধীনে গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। একাত্তরে তার হাত দিয়েই গাইবান্ধায় পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল।


২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাসহ ১৩টি মামলা হয়। ২০১৩ সালে সুন্দরগঞ্জ থানায় চার পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় অন্যতম আসামি এই আজিজ।


বাকিদের মধ্যে জামায়াতের সুন্দরগঞ্জ থানা শাখার সক্রিয় সদস্য রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জুও একাত্তরে গাইবান্ধায় শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখেন এবং পরে নিজেও যুদ্ধাপারাধে অংশ নেন। পরে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দুটি মামলা হয়।


মো. আব্দুল লতিফ ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর একজন সক্রিয় কর্মী এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ের নেতা। তার বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগসহ তিনটি মামলা হয়।


আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী মুক্তিযুদ্ধের আগে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সক্রিয় নেতা ছিলেন। পরে জামায়াতে ইসলামীতে সক্রিয় হন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধে জড়ান। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পরে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়।


১৯৭০ সাল থেকে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা হয়। ১৯৯৫ সালে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন বলে প্রসিকিউশনের তথ্য।


আব্দুর রহিম মিঞা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জামায়াতের কর্মী ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। স্বাধীনতার পর তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন- এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলা হয়।


বিবার্তা/ইমদাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com