প্রথমবারের মতো অ্যান্টার্কটিকা থেকে ভেঙ্গে আলাদা হয়ে সরে যেতে শুরু করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও পুরনো বরফখণ্ড। দীর্ঘ ৩৭ বছর ওয়েডেল সাগরের তলদেশে আটকে থাকার পর সম্প্রতি এটি নড়াচড়া শুরু করেছে। অগ্রসর হচ্ছে দক্ষিণ মহাসাগরের দিকে।
গবেষকরা জানান, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে গলতে শুরু করেছে নিউইয়র্ক সিটির চেয়ে কয়েকগুন বড় হিমশৈলটি। এখন অগ্রসর হচ্ছে দক্ষিণে। এদিকে, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বের গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্পযুগের চেয়ে বেড়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।
গেল তিন দশকের মধ্যে এই প্রথম ৪ হাজার কিলোমিটার স্কয়ারের চেয়ে বড় এই বরফখণ্ডটি ভেঙ্গে আলাদা হলো। এটির ভর এক ট্রিলিয়ন মেট্রিক টন বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের যুগ শেষ, বিশ্ব এখন প্রবেশ করেছে ফুটন্ত যুগে- জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এমন বক্তব্যের সত্যতা এখন স্পষ্ট।
চলতি বছর বার বারই ভেঙ্গেছে তাপমাত্রা বৃদ্ধির রেকর্ড। জুলাই ছিলো বিশ্বের উষ্ণতম মাস। এবার নতুন বার্তা দিলো ইউরোপের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা- কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস। সংস্থাটি জানায়, গেল ১৭ নভেম্বর প্রথমবারের মতো বিশে^র গড় তাপমাত্রা ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙ্গে প্রাক-শিল্পযুগের চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
বিশ্বের উষ্ণতা যে এভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তা আরও স্পষ্ট হলো- প্রায় ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার দীর্ঘ, ৪শ’ মিটার পুরু ও এক ট্রিলিয়ন মেট্রিক টনের বিশ্বের সবচেয়ে বড় বরফখণ্ডের নড়াচড়ায়।
গবেষকরা জানান, এ-টুয়েন্টিথ্রি নামে বিশাল এই বরফখণ্ডটি ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার উপকূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওয়েডেল সাগরে গিয়ে থামে। আটকে থাকে সাগর তলে কাদার মধ্যে। পরিণত হয় বরফ-দ্বীপে। এভাবেই ছিল দীর্ঘ ৩৭ বছর।
তবে শেষ পর্যন্ত উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে লড়াই করে আর আটকে থাকতে পারেনি হিমশৈলটি। স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা যায়, বাতাস ও স্রোতের সঙ্গে মিলে দক্ষিণে যাত্রা করেছে এটি। অতিক্রম করেছে অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের উত্তর প্রান্ত।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপে গিয়ে শেষ হতে পারে এর যাত্রা। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, হিমশৈলটির প্রভাবে হুমকির মুখে পড়তে পারে ওই দ্বীপের জীববৈচিত্র্য। আর দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে এগুলে বাধাগ্রস্ত হবে নৌ চলাচল।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]