
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। এ বন্যায় কমপক্ষে ১০ জন মারা গেছেন এবং ২১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয় সরকার সতর্ক করে বলেছে, পরিস্থিতি গুরুতর এবং আরো অবনতি হতে পারে। আটকে পড়া লোকদের সন্ধানে হেলিকপ্টারগুলি এই অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে।
রাজ্যের গভর্নর ফেডারেল সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি'র এক প্রতিবেদন।
গভর্নর এডুয়ার্ডো লেইট এক্স-এ লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট লুলা, অনুগ্রহ করে অবিলম্বে আরএস (রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল)- এর জন্য যতটা সম্ভব বিমান সহায়তা পাঠান। আমাদের কয়েক ডজন পৌরসভার শত শত লোককে উদ্ধার করতে হবে যারা ইতিমধ্যেই অতি-বৃষ্টির কারণে মানবেতর অবস্থায় রয়েছেন"।
প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত স্থান পরিদর্শন করবেন তিনি।
আগামী কয়েকদিনে আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টির মধ্যেও নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
বন্যায় ২১ জন এখনও নিখোঁজ এবং প্রায় এক হাজার ৫০০ শত লোক আটকা পড়েছে।
মি. লেইট বলেছেন, আমরা নিখোঁজদের সনাক্ত করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
সিনিমবুর মেয়র জি১ নিউজ সাইটকে বলেছেন যে, তার শহর ‘একটি দুঃস্বপ্ন’ এর মধ্য দিয়ে বসবাস করছে।
বন্যার পানি বাড়িগুলোতে ঢুকে পড়ায় ক্যান্ডেলারিয়া এলাকার বাসিন্দারা তাদের বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছে।
ভারী বৃষ্টিতে বেশ কিছু ব্রিজ ভেঙে পড়েছে এবং রাস্তা-ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সান্তা ক্রুজ ডো সুল শহরের বাসিন্দা আন্দ্রিয়ানা স্যালেট গ্যাস বলেন, আমরা সবকিছু হারিয়েছি, আমাদের খাবার, আমাদের বাড়িতে যা কিছু ছিল সবকিছু হারিয়েছি আমরা।
তিনি বলেন, আমাদের বাড়িটি দুই মিটার উঁচু কিন্তু এটি এখনও বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে ভূমিধসের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলার জন্য লোকজনকে সতর্ক করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের ডেপুটি গভর্নর গ্যাব্রিয়েল সৌজা বলেছেন, বৃষ্টি-বন্যায় প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কমপক্ষে ১১ জন বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এবং ২০ হাজার মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
আবহাওয়াবিদরা এই অঞ্চলে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছেন। কারণে হিসেবে তারা বলছেন যে, দেশটির উপরে দিয়ে সম্প্রতি একটি শীতল আবহাওয়ার ঢেউ পার করেছে। গত বছর রিও গ্রান্ডে দো সুলে ঘূর্ণিঝড়ে ৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।
ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেটিওরোলজি ঘনঘণ বৃষ্টিপাত এবং এর তীব্রতার জন্য এল নিনোকে দায়ী করছেন।
জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাতে ১৪শ’র বেশি মানুষ বাস্তচ্যুত হয়েছেন। আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস থাকায় রাজ্যজুড়ে বন্যার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]