চীন চায় ব্রিকসের সম্প্রসারণ, কৌশলগত অংশীদারদের চায় ভারত
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৩, ১৯:২০
চীন চায় ব্রিকসের সম্প্রসারণ, কৌশলগত অংশীদারদের চায় ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্বের উদীয়মান শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকসের এবারের সম্মেলনের অন্যতম প্রধান ইস্যুই হচ্ছে জোটের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি। কৌশলগত অংশীদারদের ব্রিকস জোটে নিতে চায় ভারত। আর ব্রিকসের সম্প্রসারণের বিষয়টি এগিয়ে নিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে চীন।


চীন বলছে, যেকোনও বাধা আসুক না কেনও ব্রিকসের পরিধি বাড়তে থাকবে। ব্রিকসের ১৫তম সম্মেলনের প্রথম দিন জোটের সম্প্রারণের বৃদ্ধির ডাক দিয়ে শি জিনপিং বলেছেন, চীনের ডিএনএ-তে আধিপত্যবাদ নেই।


চীন ইতিহাসের সঠিক পক্ষে রয়েছে। যেকোনও বাধা আসুক না কেনও ব্রিকসের পরিধি বাড়তে থাকবে। আমরা ব্রিকসকে একটি শক্তিশালী জোটে পরিণত করবোৃ সদস্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ করবো, আন্তর্জাতিক আইনকে আরও ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত করতে সহায়তা করবো।


অপর দিকে ব্রিকসের নতুন সদস্য নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য গঠনের চেষ্টায় নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ভারত। জোটের পাঁচ সদস্যের মধ্যে এ সংক্রান্ত আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই।


মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছে ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও এতে অংশ নিয়েছেন চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের সরকার প্রধানরা। জোটের আরেক সদস্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবারের সম্মেলনে সশরীরে যোগ দেননি।


পিটিআই জানিয়েছে, সদস্যপদের মানদণ্ড এবং ব্রিকসের নতুন সদস্য নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারত। নয়াদিল্লির কৌশলগত অংশীদারদের ব্রিকসে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশটি।


এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেছিলেন, ব্রিকসে জোটে যোগ দিতে অন্তত ২৩টি দেশ ব্রিকসের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছে। ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং আর্জেন্টিনা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।


শক্তিশালী উদীয়মান বাজার হিসেবে পশ্চিমাদের বিকল্প বিবেচনা করা হয় চীন-রাশিয়ার ব্রিকস জোটকে। সেই জোটে যোগ দিতে গত বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছিল ইরান এবং আর্জেন্টিনা।


ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের শক্তিশালী হয়ে ওঠা বর্ণনা করতে গিয়ে ২০০১ সালে প্রথম ব্রিক (বিআরআইসি) শব্দটি ব্যবহার করেন গোল্ডম্যান স্যাশের অর্থনীতিবিদ জিম ও’নেইল। ২০০৯ সালে রাশিয়ায় নিজেদের প্রথম সম্মেলন করে দেশগুলো। ২০১০ সালে এতে যোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকাও। তখন থেকে এই জোট ব্রিকস (বিআরআইসিএস) নামে পরিচিত হয়।


ব্রিকস দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতি চীনের। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাবে, জোটের ২৭ লাখ ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির ৭০ শতাংশের বেশিই চীনের দখলে। ভারতের ক্ষেত্রে এর হার ১৩ শতাংশ এবং রাশিয়া-ব্রাজিল উভয়ের সাত শতাংশ করে।


বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ ব্রিকস দেশগুলোতে বসবাস করে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ জোটের অংশ শতকরা ২৬ ভাগ।


১৫তম সম্মেলনে সশরীরে বক্তব্য দেননি শি জিনপিং। তার কারণ অস্পষ্ট। দক্ষিণ আফ্রিকা ও চীনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে নীরব রয়েছে। গত সোমবার তিনি জোহানেসবার্গে পৌঁছালে স্বাগতম জানান প্রেসিডেন্ট রামফোসা। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।


এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেছেন, আমরা শুধু জোটকে সংগঠিত করতে চাই।


বাংলাদেশ, ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, আলজেরিয়া, বলিভিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, ইথিওপিয়া, কিউবা, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, কমোরোস, গ্যাবন ও কাজাখস্তানসহ ৪০টির বেশি দেশ এই ফোরামে যোগ দেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com