শিরোনাম
ঋতুর পরিবর্তনে রোগব্যাধির প্রবণতা
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:৪৯
ঋতুর পরিবর্তনে রোগব্যাধির প্রবণতা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশএকটি নাতিশীতোষ্ণ দেশ। ঋতুর পরিবর্তন এখানে বেশি হয়। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের দেহের সঙ্গে একটি সম্পর্ক রয়েছে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই নানা রোগব্যাধির প্রবণতা বেড়ে যায়। মৌসুমি জলবায়ুর দেশে প্রতিটি ঋতু পরিবর্তনের সময়ই দেখা যায় আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন।


আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুসহ সকল বয়সের মানুষের মধ্যে রোগাক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দেহের ভারসাম্য হারায়। বিভিন্ন রোগব্যাধি দেখা দেয়। এই রোগগুলোর মধ্যে সাধারণত দেখা দেয় জ্বর। সর্দি কাশিও হতে পারে। হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট- এগুলো ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হয়। কিছু ত্বকের রোগও হয়।


এই সম্পর্কে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো হেলথ ডিপার্টমেন্ট এ কর্মরত চিকিৎসক ডা. বেঞ্জামিন ক্যাপলান বলেন, “আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবেশে তাপমাত্রার তারতম্য আসে। আর এই তারমাত্রার তারতম্য নানা ধরণের রোগ জীবাণুর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলে। তাই দেখা যায় ফ্লু ও অন্যান্য ভাইরাসজনিত নানা রোগে খুব সহজেই মানুষ আক্রান্ত হয়”।


গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপ ও আর্দ্রতা পরিবর্তনের ফলে শরীরে ঘাম হয় প্রচুর। এই অতিরিক্ত ঘামের ফলে নানা জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হয়, যা বিভিন্ন অসুস্থতা ও জ্বরের খুব স্বাভাবিক কারণ। গরমেকালে কারো কারো অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। ধুলাবালির ফলে চোখ জ্বালাপোড়া দেখা দেয়, চোখে ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ হয়। তাছাড়া যারা কৃষক, তাদের মাঝে ফসল তোলার সময়টায় জ্বরের প্রকোপ বেশ বেড়ে যায়। এটা হয় মূলত ফসলের বিভিন্ন আলারজেনের সংস্পর্শে আসার ফলে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনের ফলাফল। এছাড়া পেটের নানা সমস্যাও অতিরিক্ত গরমে বেড়ে যায়। গরমে সাধারণত বাইরের খাবার বা পানীয় বেশি খাওয়া হয়, ফলে পেটের সমস্যা বিশেষ করে নানা পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়।


অন্যদিকে, শীতকালে শুষ্কতার জন্য অ্যালার্জির প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। শুষ্কতায় ত্বক ফাটা, অ্যাকজিমা, সোরিয়াসিস ছাড়াও ঠাণ্ডা, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও বেড়ে যায়। ঋতু পরিবর্তনের সাথে আসে ফ্লু জাতীয় বিভিন্ন ছোঁয়াচে রোগ যা খুব দ্রুত একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ে। ঠাণ্ডা বা সর্দির জন্য দায়ী রাইনো ভাইরাস বা করোনা ভাইরাসও একটু ঠাণ্ডা আবহাওয়া থাকলেই দ্রুত ছড়ায়।
আবার শীতের শুষ্ক বাতাসে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিস্তার ঘটে দ্রুত এবং সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতাকে ত্বরান্বিত করে। ব্যাক্টেরিয়াজনিত ইনফেকশন এবং সাইনাস এর সমস্যাও এই সময় বেড়ে যায়। শুকনো বাতাসে ধুলাবালি বেড়ে গিয়ে নানা ধরণের অ্যালার্জির সমস্যাও সৃষ্টি হয়।


ঋতুর পরিবর্তনের এ সময় নানা জীবাণুর আক্রমণ ও পরিবেশের পরিবর্তনজনিত কারণেই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয় যার সাথে আমাদের শরীর ঠিক মানিয়ে নিতে পারে না। তাই ঋতু পরিবর্তনের সময় সুস্থ থাকার জন্য চাই সচেতনতা, পর্যাপ্ত ঘুম, শরীরচর্চা ও পরিচ্ছন্ন থাকা। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলবে।


আবহমান কাল থেকেই ঋতুর এই পরিবর্তন চলে আসছে এবং চলতেই থাকবে। এই পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন বা রোগব্যাধি হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই আমাদের সবাইকে হতে হবে সচেতন, নিতে হবে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com