মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক ছাড়াল ২১ কোটি
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০:৩৯
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক ছাড়াল ২১ কোটি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

হিসাব খুলতে কোনো টাকা লাগে না। শহর কিংবা গ্রামে নিমেষেই পাঠানো যায় অর্থ। কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, ঋণ গ্রহণসহ যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নানা পরিষেবা। বিদেশ থেকে সহজে আসছে রেমিট্যান্স। মুহূর্তে সর্বত্র লেনদেনে গতিশীল করছে দেশের অর্থনীতি। এসব সুবিধার কারণে মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি বাড়ছে নির্ভরশীলতা।


বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় চলতি বছরের আগস্ট মাসে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গড়ে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।


গ্রাহক ২১ কোটি
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সঙ্গে দিনদিন বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টির মতো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের আগস্ট মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার জন। অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করছেন। লেনদেনের সুবিধার্থে তারা একাধিক সিমে হিসাব খুলছেন।


নিবন্ধিত এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১২ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ১৪১ ও নারী ৮ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ৫৯৮ জন। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৮৮টি।


নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন ক‌রে‌নি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় বলে গণ্য করে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে আগস্ট শেষে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ১৯ লাখ ৬৩ হাজার।


এখন গ্রাহক ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহক সম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজে ঝামেলা ছাড়াই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খোলার সুযোগ পাচ্ছেন।


২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপরই রয়েছে ‘নগদ’র অবস্থান।


বিভিন্ন সেবা
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এখন গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও দেওয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। পোশাকখাতসহ শ্রমজীবীরা এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন। যার ফলে দিনে দিনে নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। এই প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।


আগস্ট মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ঢুকেছে ৩৫ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা, আর উত্তোলন হয়েছে ৩০ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। এসময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩০ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এসময় প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে ৫১৫ কোটি টাকা।


বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় দুই হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন পরিষেবার তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় ৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com