দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলেও কমছে না দাম। ক্রেতারা বলছেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নতুন করে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় একলাফে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ৩০ টাকা কেজির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আমাদের এখনো বেশি দামে বন্দর থেকে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে বন্দরের আমদানিকারকরা জানান, এমনিতেই ভারতে পেঁয়াজের দাম ছিল বাড়তির দিকে। তার সঙ্গে ভারত সরকার নতুন করে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করায় দাম দ্বিগুণ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) পেঁয়াজের ক্রেতা, বিক্রেতা ও আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে এবং ২৫ আগষ্ট সকালে হিলি কাঁচা বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ এর সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে কিন্তু দাম কোন রকমেই কমছে না। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির অনেক গুদামে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তবুও কম দামে বিক্রি করছে। যেসব পেঁয়াজ খাওয়ার উপযোগী নয় এরকম পেঁয়াজ ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে শুনা গেছে বন্দরে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ ক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, এক লাফে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হবে, এটা ভাবতেই পারিনি। এক সপ্তাহ আগে যে পেঁয়াজ কিনলাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। আর আজ (শুক্রবার) এক সপ্তাহ পরে সেই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আমি চাকরিজীবি তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাসার কাঁচা বাজার শেরে ফেলি। এক সপ্তাহ পরে বাজারে এসে দেখতেছি পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ।
খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল আহম্মেদ বলেন, এক সপ্তাহ আগে বন্দর থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ প্রকারভেদে ২২ থেকে ২৩ টাকা দরে কিনে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। আর এই চলতি সপ্তাহে হিলি বন্দর থেকে কিনতে হচ্ছে প্রতিকেজি ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। আর বিক্রি করছি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। এরমধ্যে রয়েছে ভ্যান ভাড়া ও লেবার খরচ।
হিলি বন্দরের আমদানি রফতানি কারক গ্রুপের সভাপতি আলহাজ্ব হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, বাংলাদেশ সরকার চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে আবারও গত ৫ জুন থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। তারপর থেকে স্বাভাবিক ছিল পেঁয়াজের বাজার। পাইকারি ২২ থেকে ২৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিরুৎসাহিত করতে গেলো ১৮ আগস্ট থেকে। নতুন করে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর ফলে আগের চেয়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ আমদানি মূল্য বেড়ে যায় ৫ থেকে ৬ টাকার মতো। এর সঙ্গে আছে পরিবহন খরচ, বাংলাদেশের কাস্টমস শুল্কসহ অন্যান্য খরচ। সবমিলিয়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজে পড়ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর বন্দরে বিক্রি করছি ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে।
পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিডেটের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ বলেন, ভারত থেকে হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত আছে। সপ্তাহের শেষ দুই দিনে বুধবার ও বৃহস্পতিবার এই বন্দর দিয়ে ৬৯টি ভারতীয় ট্রাকে ২ হাজার ৭১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
বিবার্তা/রববানী/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]