
চলতি বছরের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত সিনেমা ‘পদ্মাবতী’। অবশেষে ‘পদ্মাবতী' বিতর্কের অবসান হলো! রাজস্থানের রাজপুরুষ এবং ইতিহাসবিদদের বৈঠক ডেকে ছবি দেখানোর পরে সিদ্ধান্তে এল সেন্সর বোর্ড- ছবিটাকে মুক্তি পেতে দেওয়া যেতে পারে! তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে!
গত ১ ডিসেম্বর মুক্তির কথা থাকলেও বেশ কিছু সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রতিবাদের কারণে তা পিছিয়ে যায়। সিনেমাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, এতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন পর্যন্ত হন বিক্ষোভকারীরা। তবে মুক্তির বিষয়টি সেন্সর বোর্ডের ওপরই ছেড়ে দেন আদালত।
পরবর্তীতে ইতিহাসবিদ ও রাজপরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈরি একটি প্যানেল এবং সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা ২৮ ডিসেম্বর সিনেমাটি দেখেন। এরপর ২৬টি সংশোধনী ও নাম পদ্মাবতী থেকে পদ্মাবত রাখার জন্য প্রস্তাব দিয়ে ছাড়পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় সেন্সর বোর্ড।
সঞ্জয় লীলা বানসালির সামনে ছবি মুক্তির জন্য তিনটি শর্ত রেখেছে সেন্সর বোর্ড। তার মধ্যে প্রথমটি হল ছবির নাম বদলে দেওয়া। মালিক মহম্মদ জয়সির ‘পদুমাবৎ’ কাব্য অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ছবির চিত্রনাট্য, তাই ‘পদ্মাবতী’ নামটা রাখা চলবে না! ছবির নাম বদলে করতে হবে ‘পদ্মাবত’! তাহলেই ছবিটা মুক্তি পেতে পারে প্রেক্ষাগৃহে।
দ্বিতীয় শর্ত হল জহর ব্রত সাপেক্ষ। বানসালির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযোগ এনেছিলেন সেন্সর বোর্ড প্রধান, তার ছবিতে চিতোরগড়ের রানির অন্যান্য নারীদের সঙ্গে জহর ব্রত পালনের দৃশ্য প্রভাবিত করতে পারে ভারতীয় রমণীদের! ছবি দেখার পরে দেশের ঘরে ঘরে তার অনুকরণে শুরু হতে পারে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সতী হওয়ার পালা- এরকম কথা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলেছিলেন জোশী। সেই যুক্তিতে অটল রইলেন তিনি। জানালেন, ওই জহর ব্রত পালনের দৃশ্য যদি তেমন গৌরবাত্মক করে না দেখানো হয়, তবে ছবির মুক্তিতে অসুবিধা নেই।
আর তৃতীয় শর্ত?
সেটা অবশ্য যুক্তিগ্রাহ্য। এই শর্তটা উঠেছে ছবির ‘ঘুমর’ গানকে কেন্দ্র করে। হাজার হোক, এক রানি তো আর প্রকাশ্যে নাচতেন না ওই সময়ে! ফলে, ওই গানটির কিছু অংশ কেটে বাদ দেওয়ার দাবি করেছে সেন্সর বোর্ড।
এই তিনটি শর্তের কথা পরিচালককে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। বোর্ড বলছে, বনসলিকে এই তিনটি শর্ত পালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি চিঠি দিতে হবে। তাহলেই ছবি কত তারিখে মুক্তি পেতে পারে, তা জানিয়ে দেবে সেন্সর বোর্ড।
মালিক মুহাম্মদ জায়সির লেখা ‘পদ্মাবতী’ মহাকাব্যের ওপর ভিত্তি করে পদ্মাবতী সিনেমার কাহিনি তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়। এর বর্ণনা অনুসারে রানি পদ্মিনীর প্রতি আকৃষ্ট হন আলাউদ্দিন খিলজি। ফলস্বরূপ চিতরগড় দখলের চিন্তা করেন তিনি। পরবর্তীতে পরিত্রাণ পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন রানি।
সিনেমাটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় যখন করনি সেনা জানতে পারে, রানি পদ্মিনী ও আলাউদ্দিন খিলজির একটি রোমান্টিক দৃশ্য দেখানো হয়েছে। যদিও পরিচালক, অভিনয়শিল্পী ও পদ্মাবতী টিমের অন্যান্যরা এ ধরণের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন।
পদ্মাবতী সিনেমাটি পরিচালনা করছেন সঞ্জয় লীলা বানসালি। এতে রানি পদ্মিনীর চরিত্রে অভিনয় করছেন দীপিকা পাড়ুকোন। আলাউদ্দিন খিলজি ও রাজা রাওয়াল রতন সিংয়ের ভূমিকায় দেখা যাবে রণবীর সিং ও শহিদ কাপুরকে।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]