
নীলফামারী-১ (ডোমার -ডিমলা) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের মনোনয়নের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল নেতাকর্মীরা। কিন্তু প্রথম তালিকায় মনোনয়ন না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
তারা বলছেন, জোটের স্বার্থে জোটের শরিকদল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মন্জুরুল ইসলাম আফেন্দিকে আসনটি ছেড়ে দিতে বিএনপি প্রার্থী দেয়নি বলে জমিয়তের নেতাকর্মীরা দাবী করছেন। এ কারণে তাদের (জমিয়তে) মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মন্জুরুল ইসলাম আফেন্দিকে কে মনোনয়ন দেওয়া হলে আসনটি হাত ছাড়া হয়ে যাবে। এখানে খুব সহজে জামাত প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বিজয়ী হবেন। এ সব বিবেচনায় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এ ব্যাপারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নীলফামারী-১ আসনটি আওয়ামী লীগ না থাকায় এবার বিএনপির জন্য সম্ভাবনাময়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে হওয়ার সুবাদে তিনি অতীতে ও বর্তমানে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, রাস্তা, মসজিদ -মন্দিরে,এলাকায় কর্মসংস্থানে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে। তিনি (প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন) ও তার নেতাকর্মীরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, তারেক রহমানের ঘোষিত দফার লিফলেট বিতরণ সহ ধানের শীষে প্রতিকের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ১৭ বছর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তারা আন্দোলন সংগ্রাম করছেন। হামলা মামলা, জেল জুলুম নির্যাতন তারা সহ্য করেছেন।দেশে যখন গনতন্ত্রের সুবাতাস বইছে তখন জোটের নামে অন্য দলের নেতা উড়ে এসে জুড়ে বসার চেষ্টা করছে। তাদের দাবী- খালেদা জিয়ার পরিবারের এ রকম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিকে না দিয়ে অন্য কাউকে দেওয়া যেন না হয়। এ আসনের তৃণমূল নেতাকর্মী চাওয়া, রংপুর বিভাগের জন্য তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিভাবক। তিনি ডোমার - ডিমলার উপজেলা বিএনপির সব ইউনিট পুনর্গঠন করেছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০০ জন করে ------১৮৯ টি ওয়ার্ডে ৯৪ হাজার ৫ শত নেতাকর্মী ও সমর্থক রয়েছে। তাদের(নেতাকর্মীদের) পরিবারে তিন সদস্য হলেও দুই লক্ষ ৮৩ হাজার ভোটার তাকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। এর পর বিভিন্ন দল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী যোগ দিচ্ছেন। এ দিক থেকে হিসাব করলে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন কে প্রার্থী করলে চার লক্ষ ৩৮ হাজার ভোটের মধ্যে বিপুল ভোটে তিনি নির্বাচিত হতেন।
নেতাকর্মীরা আরো বলেন, ৯১ সালে বিএনপির প্রার্থী মাত্র ১৪ শত ভোট পায়। ৯৪ সালে ইন্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বিএনপির হাল ধরেন। দলকে সুসংগঠিত করেন,এমপি না হয়েও খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য হওয়ার সুবাদে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেন ৯৬ সাল পর্যন্ত। ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রয়ারীর সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ব্যানারে সাংসদ নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েও ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাস্তা -ঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট,মসজিদ -মন্দির, হাইস্কুল,কলেজ, বিদুৎ সহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। একজন সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসাবে ডোমার -ডিমলা, তথা নীলফামাভরী জেলায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। দলকে সুসংগঠিত করেন।বিএনপি তাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিলে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী হবেন।
বিএনপির উপজেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সাংগঠিক সম্পাদক মাসুদ বিন সুমন জানান, ইন্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন যোগাযোগ ব্যবস্থা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও উন্নয়ন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, বিভিন্ন পয়েন্টে তিস্তা বাধ নির্মান ও বিদ্যুৎ সরবরাহ জনগনের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। এখনো উনি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিজ কর্ম প্রচেষ্টায় অব্যাহত রেখেছেন যা সকলের কাছে দৃশ্যমান।
উন্নয়ন, অগ্রগতি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত নাগরিক অধিকার ও শান্তির জনপদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আপামর জনসাধারণ নীলফামারী ১ আসনের ধানের শীষের কান্ডারী তুহিন ভাইকে ভোট দিবে।
প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের কিছু রণকৌশল থাকে ভোটে সেই কৌশলগত কারণে এখানে কোন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি বলে আমরা মনে করি। তিনিই এখানে নির্বাচন করবেন বলে আমরা হৃদয়ে ধারণ করি।
নেতাকর্মীরা আরো জানান, নীলফামারী-১ আসনে খেজুর গাছকে প্রার্থী করলে আসনটি নিশ্চিত জামাতের ঘরে চলে যাবে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ডোমার উপজেলা শাখা সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ সাজ্জাদ কিবরিয়া পাপ্পু বলেন, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী দেশের একজন খ্যাতনামা আলেম, সুপরিচিত ও সুপরিচ্ছন্ন একজন রাজনীতিবিদ, সৌদিআরব সরকারের দাওয়া ও ইরশাদ বিভাগের তিনি একজন সাবেক লেকচারার, একই সাথে বাস্তবিক অর্থেই তিনি একজন সমাজসেবক ও জনদরদী মানুষ।
২০০১ সাল থেকে অদ্যাবধি নিজ এলাকায় মসজিদ,মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা,অযুখানা নির্মাণ,বোরিংসহ শত শত টিউবয়েল প্রদান,অসহায়দের মাঝে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ ও অর্থ সহায়তা প্রদান,শীতবস্ত্র বিতরণ,গৃহহীনদেরকে ঘর করে দেওয়া,চলাফেরায় অক্ষমদেরকে হুইল চেয়ার প্রদান ও চিকিৎসাসেবাসহ নকল্যাণমূলক নানাবিধ কাজ আঞ্জাম দিয়ে আসছেন, এ কারণে জনগণের কাছে তিনি একজন গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যেহেতু তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মত একটি শতবর্ষী দলের মহাসচিব,যেহেতু সারাদেশে এই দলের উল্লেখযোগ্য ভোটব্যাংক ও জনসমর্থন আছে, সেহেতু জোট হলে সভাপতি ও মহাসচিবকে বাদ দিয়ে তো আর জোট হওয়া সম্ভব নয় তাই জোট হলে তিনিই জোটের নমিনেশন পাবেন,তা সহজেই অনুমান করা যায়। তা ছাড়া নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনটা অতীত নির্বাচনগুলোর ফলাফল বিশ্লেষণে বিএনপির আসন হিসেবে পরিগণিত নয়। শুধু বিএনপির ভোট দিয়ে এই আসনে বিএনপি প্রার্থীর বিজয় অর্জন সম্ভব নয়,তাই আসনটি উদ্ধার করতে হলে আফেন্দী সাহবকে মনোনয়ন দেয়াই অধিকতর বাস্তব সম্মত। কারণ তাঁর নিজস্ব ভোটগুলো ও বিএনপি সমর্থকদের ভোট একত্রিত হলে তার বিজয় সম্ভব ও সহজ।
এ আসনে জামাতের প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াছেন। জামাতের প্রার্থী অধ্যাপক মো. আব্দুস সাত্তার বলেন,হোয়াটস এ্যপে ফোন দেন। হোয়াটস এ্যপে ফোন দিলে ফোন ধরেন নাই।জামাতে ইসলামের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম, আবদুল হক কে ফোন দিলেও তারাও ফোন ধরেননি।
বিবার্তা/কামাল/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]