
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে দূর্গা পূজার বিসর্জনে কিছু সময় আনন্দ উৎসবে মেতেছিল দুই বাংলার মানুষ। ২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের উপস্থিতিতে মাথাভাঙ্গা নদীর দুইপাড়ে বসেছিল জনস্রোতের মিলন মেলা। বিজয়া আনন্দে নদীপাড় থেকে দাড়িয়ে তারা ওপারের নিকট আত্মীয়দের একনজর দেখে অশ্রুসজল নয়নে আত্মীয়তার বন্ধনও করেছে অটুট। তবে সীমান্তরক্ষীদের কড়া নিরাপত্তার কারনে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই পূজা বিসর্জন শেষ হলে সাঙ্গ হয় দুই দেশের নদীপাড়ের মিলন মেলা।
ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শিকারপুর সীমান্ত আর এপারে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ সীমান্ত (ভারলের মাঠ)। মাঝখানের সরু মাথাভাঙ্গা নদী তার সীমানা। এ নদীর দুইপাড়ে দূর্গোৎসবের পূজা বিসর্জনে কাটাতারের সীমানা বিভেদ ভুলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য ঘটেছিল নদীপাড়ে দাড়িয়ে আনন্দ ও সোহার্দপূর্ণ মিলন। দেবী দূর্গাকে বিসর্জন দিতে এসে দুই দেশের মানুষ সোহার্দ ও স¤প্রীতির বন্ধনকে করেছে অটুট। মাথাভাঙ্গা নদীর দূইপাড় থেকে তাদের মধ্যে হয়েছে কুশল বিনিময়। অশ্রæসজল নয়নে আত্মীয় স্বজনরা একে অপরকে বেঁধেছে মমতার বন্ধনে।
যারা পাসপোর্ট-ভিসা করে এদেশ থেকে ভারতে যাতায়াত করতে পারেন না, তাদের জন্য বছরে একটি উৎসবের অপেক্ষা। আর তা হলো দূর্গোৎসবের বিসর্জন। যারা আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দুই দেশে যাতায়াত করতে পারেননা তাদের অপেক্ষার অবসান হয় বিজয় দশমীর দূর্গার বিসর্জন ক্ষণে। দুপুর হতে না হতেই ব্যকুল হয়ে থাকা মানুষগুলো ছুটে যান মাথাভাঙ্গা নদীপাড়ে আপনজনের দেখা পেতে। অশ্রæসজল নয়নে দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখতে থাকেন এপার ও ওপারে থাকা আপনজনদের। দীর্ঘদিন পর একপলক দেখা পেতেই মিলে মনের শান্তি। ফিরে প্রশান্তির স্বস্থি এমনটা জানিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম নামে এক স্কুল শিক্ষক। তিনি প্রতিবছরই এভাবে ওপারের স্বজনদের সাথে দেখা করতে ছুটে যান ধর্মদহ সীমান্তের ভারলের মাঠে।
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি-বিএসএফ’র কড়া নজরদারি থাকলেও কিছু সময়ের জন্য তারাও সীমানা নজরদারি ভুলে নদীর দুইপাড়ে থাকা দুই দেশের বাঙ্গালীদের স¤প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে সহায়তা করে থাকেন। তবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই পূজার বিসর্জন শেষ হয়। সেইসাথে সাঙ্গ হয় সম্প্রীতি ও সোহার্দের মিলন বন্ধন। অপেক্ষা আরো একটি বছর।
এদিকে সারা দেশের ন্যায় কুষ্টিয়াতে আজ বৃহস্পতিবার বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় দূর্গোৎসব। কড়া নিরাপত্তায় বিকেল ৪টার পর থেকে দেবী দূর্গাসহ প্রতিমাগুলো নেওয়া হয পদ্মা, গড়াই ও মাথাভাঙ্গা নদীসহ বিভিন্ন স্থানে। কুষ্টিয়া শহরের দূর্গাপূজার বিসর্জন হয় গড়াই নদীতে। কুষ্টিয়ায় এবছর ২৫০টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় শারদীয় দূর্গোৎসব। কুষ্টিয়ায় প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে প্রশাসন।
বিবার্তা/শরীফুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]