
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লার রাস্তাঘাট সংস্কারের অভাবে প্রায় রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমে থাকে। জমে থাকা পানি আর গর্তে সড়কগুলো যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জেল রোড মোড় থেকে মোদকবাড়ি মোড় পর্যন্ত আবার খৈয়ারসা রোড থেকে গ্যাস ফিল্ড স্কুল এন্ড কলেজ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়কটির বেহাল দশা , জনজীবনে ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশায় স্কুল-কলেজে ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদ যাতায়তে প্রতিদিনই ভোগান্তিতে পড়ছে। তেমনি ভোগান্তিতে পড়ছেন সড়কের চলাচলকারীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভায় অবস্থিত হলেও অনেক সড়ক মূলত জেলা পরিষদের আওতাধীন থাকায়। দুই সংস্থার টানাটানিতে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়াতেই শহরের প্রায় সড়কগুলোর এমন বেহাল দশা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্যাসফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের রিয়াজ আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী, একটি অটোরিকশায় যাচ্ছিলেন তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। রিকশাটি বিরাসার বাসস্টেশনের কাছাকাছি আসতেই সড়কের গর্তে পড়ে উল্টে যাবার উপক্রম হয়। লাফিয়ে সে নিরাপদে নামতে পারলেও জমে থাকা ময়লা পানিতে নোংরা হয়ে যায় তার পোশাক।
প্রায় প্রতিদিনই তার মতো এমন ভোগান্তিতে পড়ছেন পৌরসভার খৈয়ারসা লালপুর সড়কের মোদকবাড়ি মোড় থেকে বিরাসার বাসস্টেশন পর্যন্ত সড়কের চলাচলকারীরা। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনায় আহতও হয়েছেন অনেকে।
গ্যাসফিল্ড স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রিয়াজ আহমেদ বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করতে অনেক কষ্ট হয়। আমাদের ছাত্রদের জন্য হলেও দ্রুত যেন এ সড়কটি মোরামত করে দেওয়া হয়।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কলেজে যাতায়াত করেন মো. সাকিব। তিনি বলেন, সড়কটির বাজে অবস্থার কারণে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটতেছে। এলাকার মানুষজন পৌরসভার কাছে কয়েকবার গিয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।
সড়কের পাশে মা সাদিয়া ট্রেডার্সের মালিক সোহেল মিয়া বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য খুব খারাপ। ঢাকা থেকে মালমাল আসতে পারে না। কাস্টমার তো আসেই না। প্রতিনিয়তো যানবাহন ভেঙে পড়ে থাকে।
তিনি প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান, সড়কটি যেন দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হয়।
পথচারী লাইলী বেগম বলেন, এই সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। এই সড়কটি দিয়ে চলাচলে আমাদের সকলেরই সমস্যা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাউছার আহম্মেদ বলেন, সড়কটি পৌরসভার মধ্যে পড়লেও এটি জেলা পরিষদের আওতাধীন। তাই তিনি সড়কটির বিষয়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন।
তবে পৌরসভার কয়েকজন নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, জেলা পরিষদের কাজ সময়সাপেক্ষে হয়ে থাকে এবং ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করতে হয়। পৌরবাসীর চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যা চিন্তা করে হলেও পৌরসভা সড়কটির বড় বড় গর্তগুলো সংস্কার করে দিলেও মানুষদের দুর্ভোগ কমত।
পৌরসভার প্রশাসক চাইলে পৌরসভার বিভিন্ন আয়ের অংশ থেকে, জেলা প্রশাসক অথবা ইউএনও থেকে বরাদ্দ নিয়েও রাস্তাটি সংস্কার করে দিতে পারে।
তবে পৌরবাসীর জন্য কিছুটা স্বস্তির বার্তা দিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, এর মধ্যেই মোদকবাড়ি মোড় থেকে বিরাসার পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কটির সংস্কারে টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
বিবার্তা/আকঞ্জি/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]