
জামায়াত ইসলামী বিএনপিকে নিয়ে সমালোচনার সময় ‘নিরপরাধ ভাব করে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেছেন, ‘‘নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করছে, তাদের মধ্যে আরেকটা দল (জামায়াতে ইসলামী) আছে, যারা আমাদের সঙ্গে সরকারে ছিল।
“কিন্তু যখন সমালোচনা করে তখন ভাবটা এমন যে, তারা কোনো দিন কোনো সরকারে ছিল না, একেবারে নিরপরাধ । অথচ তাদের দুইজন সরকারে ছিল।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বৃহস্পতিবার নব্বইয়ের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে নিহত ডা. শামসুল আলম খানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন নজরুল ইসলাম।
আশির দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলন ও সেসময়ের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী ‘বেঈমানি’ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আন্দোলন যখন অত্যন্ত শক্তিশালী, সেই সময় ছিয়াশির নির্বাচনে জাতির সঙ্গে বেঈমানি করে দুটি রাজনৈতিক দল এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়েছিল….আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামী। স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নামে তারা প্রথম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ১৯৮৬ সালে এরশাদের সময়ে।
“১৯৭৯ সালে জামায়াতে ইসলাম নামে কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেয় নাই। যে দলটি অংশ নিয়েছিল সেটা হল ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল)। এতে জামায়াতের লোক ছিল। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী দল হিসেবে তখন নির্বাচনে যায় নাই।”
এ বিএনপি নেতা বলেন, “১৯৮৬ সালে যে নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয় নাই, আওয়ামী লীগ আর জামায়াত অংশ নিয়েছিল। ওই সংসদ এরশাদের সামরিক শাসনকে বৈধ্যতা দিয়েছে। ওই সংসদ আমাদের জাতীয়করণ অধ্যাদেশ বাতিল করেছে, তারা যদি না নির্বাচনে ওই সংসদটা গঠিত হত না। অর্থাৎ এরশাদকে তার জীবন বাড়িয়ে দিয়েছে যারা ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তারা। তা নাহলে ১৯৮৬ সালেই এরশাদের পতন হত।”
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘যারা এরশাদের জীবন বাড়িয়ে দিয়েছে, তারা তো মূল্য পেয়েছে। এর বিনিময়ে তো এরশাদ ও তার দল ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী দুঃশাসনের সহযোগী ছিল। আওয়ামী লীগ তাদের সহযোগিতা করেছে টিকে থাকতে ছিয়াশি সালে। আর এর বিনিময়ে তারা সহযোগিতা করেছে আওয়ামী লীগকে টিকে থাকতে।”
সভায় ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘‘নববইয়ে নয় বছরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আপোসহীনভাবে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলেই এরশাদের পতন হয়েছিল। এজন্য তাকে অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। কয়েকবার তাকে কারাবন্দি করা হয়েছে। হোটেল পূর্বানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তাতে তিনি দমে যাননি।
‘‘আরেকজন নেত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা । তিনি ছিয়াশি সালে এরশাদের সঙ্গে ‘লং ড্রাইভে’ গিয়ে রাতে অন্ধকারে জাতির সঙ্গে বেঈমানি করে নির্বাচনে গিয়েছেন, সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধীদেরও নিয়েছে। তাদের আঁতাতে স্বৈরাচারের শাসন ক্ষমতা কিছুটা বেড়েছে এই যা…। এরশাদের পতন কিন্ত তারা ঠেকাতে পারেনি।”
আলোচনাসভার আগে সকালে ‘৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের’ পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে শহীদ মিলনের স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন আমান উল্লাহ আমানের নেতত্বে ছাত্রনেতারা।
ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বিএনপির রুহুল কবির রিজভী, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরাফত আলী সপু, জাগপার খোন্দকার লুৎফুর রহমান, আসাদুর রহমান খান, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ড্যাব) সাধারণ সম্পাদক ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল বক্তব্য দেন।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]