জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ফটকের (ওয়াসি গেট) দক্ষিণ-পূর্ব পাশ্বে, মেয়েদের কমন রুমের পিছনের দেয়াল তথা ফুটপাতের পাশের দেয়ালটি পাবলিক টয়লেটে পরিণত হয়েছে। পথচারীদের মল-মূত্রে স্থানটি হয়ে উঠেছে দুর্গন্ধময়। তীব্র গন্ধে শিক্ষার্থীরা পড়েছে অস্বস্থিতে, অথচ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।
সরজমিনে দেখা যায়, ফুটপাতের ওপর প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনা ভাসছে পথচারীর মূত্রে। স্থানে স্থানে পড়ে আছে মল। নাকে কাপড় চাপা দিয়ে ফুটপাত থেকে নেমে, স্থানটি পার হয়ে, পুনরায় ফুটপাতে উঠে হাঁটছেন পথচারীরা। ফুটপাতের কোল ঘেঁষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতল বাসগুলো পার্কিং করে রাখায় অনেকেই ফুটপাত থেকে নেমে হাঁটার জায়গা না পেয়ে, লাফিয়ে পার হচ্ছেন স্থানটি। কোনো কোনো শিক্ষার্থীকে ডাক দিয়ে পথচারীদের সতর্ক করতে দেখা যায় কিন্তু ফাঁকা পেলেই ঠিকই বসে পড়ছেন পথচারী।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুর্গন্ধ ও আবর্জনায় ফুটপাত দিয়ে হাঁটা তো যায়ই না, আশেপাশে দাঁড়িয়েও কথা বলা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের জানালা লাগিয়ে বসে থাকতেও কষ্ট হয় তাদের।
খোলা জায়গায় পথচারীদের এভাবে মূত্র ত্যাগের ফলে, অনেক মেয়ে শিক্ষার্থীকে অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়তে হয়। দেয়ালে ছোট কাগজে শাস্তি ও জরিমানার কথা লিখা থাকলেও মানছেনা কেউই।
শাকিল আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসের পরিসর ছোট হওয়ায় আমরা প্রায়ই বাসে বসে আড্ডা দেই। কিন্তু তীব্র দুর্গন্ধে বাসে বসা যায় না। কিছুক্ষণ পর পরই পথচারীদের কেউ না কেউ বসে পরেন তাদেরকে আমাদের সতর্ক করতে হয়। যেখানে সতর্ক কিংবা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল প্রশাসনের, সেখানে সতর্ক করতে হয় আমাদের।
দেয়াল ঘেঁষেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের কমন রুমের করিডোর। অনেকেই অবসর সময় কাটাতে করিডোরে বসে আড্ডা দেয়। তীব্র গন্ধে করিডোরে বসতে পারেনা তারা। অনেক শিক্ষার্থীর করিডোরে অস্বস্তিবোধের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজনীন নিশু বলেন, প্রসাবের তীব্র দুর্গন্ধ কমন রুমের করিডোরে বসতে পারি না। ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে গেলেই প্রায়শই অপ্রীতিকর অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। অতিসত্বর এভাবে রাস্তাঘাটে মল-মূত্র ত্যাগ বন্ধ না করতে পারলে, মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্যে সেখান দিয়ে চলাচল করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা এবং পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির প্রাক্তন আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল কাদের বলেন, আমি থাকাকালীন সমস্যার সমাধান হিসেবে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কথা বলেছিলাম, কিন্তু সেটা কার্যকর হয়নি। গত আগস্টে আমাদের কমিটি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় এই ব্যাপারে আমার কিছু করার এখতিয়ার নেই, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে প্রশাসনের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলব।
এই ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমি গতকালই পুলিশ ফাঁড়ির অফিসারের সাথে কথা বলেছি, যেনো সেখানে বাস পার্কিংনা করে, গাড়ি রাখলে সড়িয়ে নেওয়ার জন্যে যেনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। পাশাপাশি সিকিউরিটি অফিসারকে বলা হয়েছে যেনো জায়গাটা পরিষ্কারের ব্যবস্থা করে, শীগ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
বিবর্তা/রুদ্র/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]