মানিকগঞ্জ-পাবনা সংযোগ সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৩, ১৬:৪৯
মানিকগঞ্জ-পাবনা সংযোগ সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

মানিকগঞ্জ-পাবনা সংযোগ সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার, ১৭ জুন সকাল ১১ টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আমরা পাবনাবাসী’র পক্ষ থেকে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।


মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ব্রিটিশ ভারতে যখন বাংলায় প্রথম স্টিমার চালু হয়, তার প্রথম রুট ছিল কলকাতা-ঢাকা-রাজবাড়ির গোয়ালন্দ-পাবনা-রংপুর-আসামের গোয়ালপাড়া। বাংলায় প্রথম যখন রেল চালু হয়, তখন কলকাতা থেকে কুষ্টিয়া-পাবনার পাকশী-দিনাজপুর হয়ে দার্জিলিং ছিল সবচেয়ে বড় রেল রুট।


পাকিস্তান আমলে ও পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সড়ক যোগাযোগের পথ ছিল ঢাকা-মানিকগঞ্জের আরিচা-পাবনার নগরবাড়ি হয়ে সমগ্র উত্তরবঙ্গ।



উত্তরবঙ্গের ষোলটি জেলা এবং দক্ষিণ বঙ্গের বৃহৎ অংশের যোগাযোগের প্রধানতম সড়ক পথ ঢাকা-আরিচা দৌলতদিয়া-নগরবাড়ি রুট।


পাকিস্তান আমলে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার পাবনার নগরবাড়িতে যমুনা সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৯ সালে ৮ অক্টোবর গাইবান্ধার এক কর্মী সমাবেশে পাবনার নগরবাড়ি প্রান্তে যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি করেন।


১৯৬৯ সালের ১০ অক্টোবর লালমনিরহাটের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু একই দাবি পুর্নব্যক্ত করেন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু পাবনার মাটিতে দাঁড়িয়ে যমুনা নদীর উপর নগরবাড়ি-আরিচা সেতু স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।


তারা আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ১ জুলাই অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ ও যোগাযোগমন্ত্রী তৎকালীন পাবনার সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী বাজেট-উত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণে বঙ্গবন্ধু সরকারের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।


১৯৭৩ সালের ১৯ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু জাপান সফরে গিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে যমুনা সেতুর ব্যাপারে আলোচনা করেন। দুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ ইশতেহারে যমুনা সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা জরিপের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা বলা হয়। বরাবরই যমুনা সেতু নির্মাণের রুট হিসেবে আরিচা-নগরবাড়ির কথা চিন্তা করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ টাঙ্গাইল প্রান্তে যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণ করা হয়।



দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে পাবনার মানুষ তাদের নগরবাড়ি প্রান্তে একটি সেতু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ঈদের সময় ছাড়াও সারাবছর ধরে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর প্রচন্ড যানজট হয়।


ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং সিরাজগঞ্জ বগুড়া মহাসড়কের উপর চাপ কমিয়ে যানজট কমানো, জনদুর্ভোগ নিরসন এবং দূরত্ব ও সময় বাঁচানোসহ সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য এখনই বিকল্প সড়ক যোগাযোগ স্থাপন এবং ২য় যমুনা-পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের ৬ জেলার সাথে মানিকগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কের মাধ্যমে সড়ক পথে দ্রুততম যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এমনটি করা হলে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুতে গাড়ির চাপ কমে সেতুর আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাবে।


বিভিন্ন জেলার সাথে যাতায়াতের দূরত্ব কমে যাবে। ফলে যানবাহনের জ্বালানী সাশ্রয় হবে। কর্ম ঘণ্টা সাশ্রয় হবে। দেশের শিল্পায়ন, কৃষি সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হবে এবং উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ হবে।


দাবি জানিয়ে তারা বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সরকার যদি পাবনাবাসীর প্রাণের দাবি অনুযায়ী মানিকগঞ্জ-পাবনা’কে সংযুক্ত করে একটি সেতু নির্মাণ করেন, তাহলে পাবনাবাসী চিরকৃতজ্ঞ থাকবে এবং তাদের ৬০ বছরের চাওয়া পূর্ণতা পাবে।


মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা এস কে হাবিবউল্লাহ, মাজহারুল ইসলাম মানিক, তৌহিদ আজিম চপল, রবিউল ইসলাম রবি, নুরুন্নবী খোকন, প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন, রাফেজা পারভীন, সালমা শারমিন, ডা. নূরী সালমা, শিমুলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/রাসেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com