টাঙ্গাইলের কামার শিল্পে মন্দার ছায়া
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫, ১৩:৫৮
টাঙ্গাইলের কামার শিল্পে মন্দার ছায়া
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আর মাত্র এক দিন পরেই মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এই উপলক্ষ্যে কোরবানির পশু ক্রয়ের জন্য বিভিন্ন হাটে হাটে দোড়ঝাপ শুরু করেছেন। অন্যদিকে, কোরবানির পশু জবাই ও মাংস বানানোর জন্য বিভিন্ন সরঞ্জামাদি বানাতে ও কিনতে ছুটছেন কামারের দোকানগুলোতে। তবে কামাররা জানান, এখনও আশানুরূপ ক্রেতার দেখা মিলছে না দোকানগুলোতে।


সরেজমিনে টাঙ্গাইল পার্ক বাজারের কামারের দোকান গুলো ঘুরে দেখা যায়, দা, বটি, চাপাতি, ছুরি, দেশি কুড়াল,চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদির পসরা সাজিয়ে বসে আছেন কামাররা।


ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও জমে উঠেনি আগের মতো কামারিদের দোকানগুলো। কামার শিল্পীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ২'শ থেকে ৩'শ টাকা, দা ৬'শ থেকে ৯'শ টাকা, বটি ৯'শ থেকে হাজারেরও উপরে, পশু জবাই ছুরি ৮'শ থেকে দেড় হাজার টাকা, চাইনিজ কুড়াল ৮'শ, দেশিও কুড়াল ৬'শ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা।


তাদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, তাদের সকলেরই পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এ পেশা। তাই তারা ঐতিহ্য হিসাবে ধরে রাখছেন এ পেশাকে।


কামার সত্যরঞ্জন দাস ও উদয় সরকারের সাথে কথা হয়। তাঁরা ৪০ বছর ধরে এই পেশার সাথে জড়িত।


তারা জানান, আগের মত আর তেমন কাজ নেই। এখন আমাদের এ পেশায় নুন আনতে পানতা ফুরানোর মত অবস্থা। সারা বছর কাজ না থাকায় মুসলমানদের ধর্মীয় এ উৎসবের অপেক্ষায় থাকি। তাতে কিছুটা হলেও পুষিয়ে উঠা যায়। বাপ-দাদার পেশা, এ পেশাই জীবন বাঁচাই, ছাড়তেও পারি না। তারপরেও কয়লার দাম বেশি হওয়ায় আমাদের হিমশিম খেতে হয়। এর সাথে কাজ করা লোক ও এখন আর পাওয়া যায় না, পরিশ্রম বেশি তাই এ পেশা থেকে লোক সরে যাচ্ছে । আগে কয়লা ও লোহার দাম কম ছিল তাই খাটা খাটনি করে ভালো দাম পাওয়া যেত। এখন তেমন টা হয় না।


তারা আরও বলেন, বাপ দাদার পৈত্তিক এই পেশায় জীবন বাঁচানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আমাদের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। তাই পেটের দায়ে পৈত্রিক পেশা ছেড়ে বাধ্য হয়ে অনেকেই এখন অন্য পেশায় ঝুকছেন।


টাঙ্গাইল পার্ক বাজারে কথা হয় জেলা সদর থেকে আসা ক্রেতা আব্দুর রহমানের সাথে তিনি জানান, গরু কোরবানির জন্য দা, ছুরি ও চাপাতির অর্ডার দিয়েছি। ঈদ আসলে দাম একটু বাড়ে। তবুও আমাদের বানাতে হয়। কোরবানির পশু কেনার যে সময় লাগে এখন তার চেয়ে বেশী সময় লাগে সরঞ্জামাদি বানাতে ।


তিনি আরও বলেন, তবে গতবারের তুলনায় এবার দাম একটু কম বলেই মনে হচ্ছে। এ ছাড়া এবার কামারের দোকানগুলোতে ভীড়ও কম পরিলক্ষিত হচ্ছে।


উল্লেখ্য, জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার জেলায় ২ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪টি কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত করা হয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৭০টি পশু। তবে জেলায় কত পরিবার কামার পেশার সাথে যুক্ত আছেন সে তথ্য জানাতে পারেননি সরকারের সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান দপ্তর।


বিবার্তা/বাবু/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com