শিরোনাম
সিলেটে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৩, ২২:৩৫
সিলেটে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন
সিলেট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সিলেট শহরতলীতে শাহরিয়ার (১৫) নামের এক কিশোর হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার ও জড়িত দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।


২৭ জুলাই, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডি সিলেট জোনের পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা।


তিনি জানান, ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি বিকেলে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দলইছড়া কাউতলা এলাকায় মোখলেছুর রহমানের বাগানের ছড়া থেকে অজ্ঞাত (১৫) কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এক নারী মোখলেছুর রহমানের কেয়ারটেকার মামলার বাদি ফয়েজ আহমদকে জানালে তিনি বাগান মালিক ও স্থানীয় খাদিমপাড়া ইউপির সাবেক সদস্য বদরুল ইসলাম আজাদকে ফোনে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।


এ ঘটনায় পরদিন ২৪ জানুয়ারি বাড়ির কেয়ারটেকার ফয়েজ আহমদকে বাদি করে একটি হত্যা মামলা (২৭(১)’২১) নেয় এসএমপির শাহপরান (রহ.) থানা পুলিশ।


সিআইডির এসপি সুজ্ঞান চাকমা বলেন, মামলাটি ক্লুলেস ছিল। দুই তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদলের পর মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেই সিআইডির পরিদর্শক মুহাম্মদ শামসুল হাবিবকে।


তৃতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে শামসুল হাবিবের নেতৃত্বে সিআইডির টিম প্রথমে নিহত অজ্ঞাত কিশোরের পরিচয় নিশ্চিত হন। নিহত কিশোরের বাবা নগরীর ঘাসিটুলার মৃত ধনু মিয়ার ছেলে মো. সেলিমের কাছে ছবি দেখে তার ছেলে শাহরিয়ার ওরফে শাকারিয়ার (১৫) মরদেহ শনাক্ত করেন এবং ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হন। এরপর ঘটনায় গ্রেফতাকৃতরা হলেন- চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানাধীন সানকিভাঙ্গা গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে ও নগরীর ঘাসিটুলা ৭৫নং বাসার বাসিন্দা সেলিম আহমদ (২১) ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আসানুর (১৭)।


বুধবার (২৬ জুলাই) রাত সোয়া ৯টার দিকে নগরীর ঘাসিটুলা ৭৫নং বাসার সামনে থেকে সেলিম আহমদকে এবং রাত ৯টার দিকে কাজিরবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এছাড়া হত্যায় ব্যবহৃত দা ঘটনাস্থলে পুকুর সেচকালে পেয়ে সংরক্ষণে রেখেছিলেন মামলার বাদি। পরে আসামিদের শনাক্তমতে সেটি আলামত হিসেবে সংগ্রহ করে পুলিশ।


গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এসপি সুজ্ঞান চাকমা আরও বলেন, নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে খুনের মোটিভ উদ্‌ঘাটনে নেমে এ দুই যুবককে গ্রেফতার করি। মূলত আসামিরা একত্রে চলাফেরা ও মাদক সেবনে করতো। এরই জের ধরে শাহরিয়ারকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে ৬ জন মিলে ঘটনাস্থল দলইপাড়া এলাকায় নিয়ে যায়।


সেখানে প্রথমে চাকু দিয়ে আঘাত করে। এরপর গ্রেফতার সেলিমের দা দিয়ে মাথা, বুকে, পেটে, পিঠে কুপিয়ে ও একাধিক ছুরিকাঘাত করে। আটকের পরপরই যখন স্থানীয় জনতা জিজ্ঞাসা করছিলো তাদের কেন আটক করলেন, তখন তাদেরকেই বলা হয়, তোমরা বলো, কেন তোমাদের আটক করা হয়েছে? তখন জনসম্মুখে তারা খুনের ঘটনা অকপটে স্বীকার করে এবং ফোনে লাউড স্পিকারের মাধ্যমে সেটি তদন্ত কর্মকর্তা আমাকেও শুনিয়েছেন।


এছাড়া আসামিদের তথ্যমতে ঘটনাস্থলে পুকুরে আলামত খুঁজতে স্থানীয় জামাল আহমদ সিআইডির টিমকে বলেন, পুকুর সেচকালে একটি দা পেয়েছেন। তখন আসামি সেলিম দা শনাক্ত করে এটি তার বলে স্বীকার করে। এ দা দিয়ে কুপিয়ে ছিল বলেও জানায়। মূলত শাহরিয়ার উগ্র ছিল। এর আগে সহপাঠীদের কয়েকজনকে নানা কারণে ছুরিকাঘাত করে। যে কারণে ছোটখাটো ভুলের জন্য পরিকল্পিতভাবে শাহরিয়ারকে হত্যা করে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর ৩ আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মুহাম্মদ শামসুল হাবিব বলেন, খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তারা স্বেচ্ছায় ঘটনার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।


বিবার্তা/ফয়সাল/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com