চুরি করা মিটার ফেরত দিতে চোরের চিরকুট!
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৩, ১০:৩৭
চুরি করা মিটার ফেরত দিতে চোরের চিরকুট!
নাটোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

‘আপনার মিটার চুরি হয়েছে, মিটার পেতে কল করুন’- এমন বার্তাসহ চিরকুট দেখা যাচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় চুরি হওয়া মিটার বাক্সের নিচে।


গত এক সপ্তাহে এ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ২২টি বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়েছে। চিরকুটে লেখা নম্বরে ফোন করলে মিটার ফেরত দেয়ার শর্তে টাকা চাওয়া হয়। বিকাশ ও নগদ নম্বরে টাকা নিয়ে মিটার কোথায় পাওয়া যাবে তার স্থান বলে দেয়া হয়।


এমন অভিযোগ এনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেড়গঙ্গারামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সজিব হোসেন নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ গুরুদাসপুর জোনাল অফিস ও গুরুদাসপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গ্রামের আরও তিনজন ব্যবসায়ী মিটার চুরি হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।


ব্যবসায়ী সজিব হোসেন বলেন, ‘দুই বছর আগে সেচ প্রকল্পের জন্য আমি বাড়ির সামনে একটি বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত চারবার আমার মিটার চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া মিটারের নিচে চোরচক্র চিরকুট রেখে যায় ও তাতে মোবাইল নম্বর দেয়া থাকে। ওই নম্বরে ফোন করলে চোরচক্রের সদস্যরা ফোন রিসিভ করে মিটার ফেরত দেয়ার শর্তে পাঁচ হাজার টাকা করে দাবি করে।


‘অনেক অনুরোধ করার পর তিনবার দেড় হাজার টাকা করে বিকাশের মাধ্যমে দিলে মিটার ফেরত দেয় তারা। টাকা দেয়ার পর চুরি হওয়া মিটার কোথায় আছে সে স্থান বলে দেয়।’


তিনি আরও বলেন, “একই কায়দায় গত সোমবার রাতে আমার মিটার আবার চুরি হয়। আগের মতোই চিরকুটে দেয়া নম্বরে ফোন দিলে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করা হয়। আমি চোরকে অনুরোধ করে কিছু টাকা কম নেয়ার কথা বললে তারা বলেন, ‘আরে ভাই এত পরে ফোন দিছেন কেন? চারজন মানুষ সারারাত পরিশ্রম করেছি। কম হলে হবে না। চার হাজার টাকা দেন। না হলে বিরক্ত কইরেন না।’


“অনেক অনুরোধের পর দুই হাজার টাকা তার দেয়া বিকাশ নম্বরে পাঠাই। টাকা পাঠানোর পর তার বাড়ির পাশে লেবু বাগানে মিটার রাখা আছে বলে জানায়।”


চুরি হওয়া আরেক মিটারের মালিক ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, “এর আগেও দুইবার মিটার চুরি হয়েছে। বরাবরের মত এবারও চোরের রেখে যাওয়া কাগজের নম্বরে কল দিয়েছিলাম। রিসিভ করেই বলে, ‘এত দেরি করে ফোন কেন দিলেন? আপনার জন্য এত অপেক্ষা করার সময় নেই। বিকাশ নম্বরে দ্রুত টাকা পাঠান।’”


মিটার বারবার চুরি কেন করছেন- এমন প্রশ্ন করলে তারা সাইফুলকে জানায়, মিটারের পাশে লাল কাপড় দিয়ে চিহ্ন দিয়ে রাখতে। তাহলে তারা বুঝতে পারবে এ মিটার এর আগে চুরি করা হয়েছিল।


নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ গুরুদাসপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম হারুনুর রশিদ বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২২টি মিটার চুরি হয়েছে। চুরির পর প্রকাশ্যে মোবাইল নম্বর দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চোর।’


গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘মিটার চোরচক্রকে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ উদ্যোগ নিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।’


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com