আজ শেরপুর কাটাখালী গণহত্যা দিবস
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৩, ০৮:৪৪
আজ শেরপুর কাটাখালী গণহত্যা দিবস
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আজ ৬ জুলাই শেরপুরের ঝিনাইগাতী কাটাখালী গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঝিনাইগাতী উপজেলার রাঙামাটিয়া খাঠুয়াপাড়া গ্রামে বর্বরোচিত গণহত্যা ঘটায় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা। এদিন মুক্তিযুদ্ধের কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন, মোফাজ্জল হোসেনসহ নাম না জানা আরো অনেক সাধারণ মানুষ শহীদ হন। প্রতিবছর দিনটিকে ঘিরে থাকে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।


বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অসামান্য অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৭ সালের ‘স্বাধীনতা পদক’ (মরোনত্তর) পান কাটাখালী সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসান। দিবসটি ঘিরে তার গ্রামের বাড়ি নালিতাবাড়ির নাজমুল স্মৃতি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


এদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবাহী কাটাখালী সেতুটি সংরক্ষণসহ শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ, কাটাখালী সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসানের স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি সেতুর পাশের স্থানটি ‘শহীদ নাজমুল চত্বর’ হিসেবে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার। চত্বরটিতে দৃষ্টিনন্দন মাশরুমের ছাতা, ফোয়ারা, ফুলের বাগান ও বসার বেঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে।


উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই অপারেশন শেষ করে মুক্তিযোদ্ধারা রাঙামাটি খাঠুয়াপাড়া গ্রামে দুইটি দলে বিভক্ত হয়ে হাজী নঈমুদ্দিন ও হাজী শুকুর মামুদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে ৬ জুলাই সকালে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই গ্রামে ঢুকার এক মাত্র কাঁচা সড়কে দুইদিক থেকে ব্যারিকেড দেয় পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার, আলবদররা। মুক্তিযোদ্ধারা বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে করতে পিছু হটে।


এসময় পাকহানাদারদের বেপরোয়া গুলিতে কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, তার চাচাতো ভাই মোফাজ্জল হোসেন ও ভাতিজা আলী হোসেন শহীদ হন। বাকি মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান পেলেও, বর্বরোচিত হামলার শিকার হন রাঙামাটি খাঠুয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের ৬০ থেকে ৭০ জনকে কোমরে দড়ি বেঁধে নির্যাতন করা হয়। তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সম্ভ্রমহানি করে কয়েকজন নারীর। পরে অমানবিক নির্যাতন করে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় গ্রামবাসী আয়াতুল্ল্যা, সামেছ মিস্ত্রি, মহেন্দ্র অধিকারী, আব্বাছ আলী, আমেজ উদ্দিন ও বাদশা আলীকে। ওইসময় আহত হন অনেকেই। দালালদের বাঁধার মুখে সেদিন লাশও দাফন করতে পারেননি শহীদদের স্বজনরা। কলার ভেলায় স্বজনরা সেই লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন নদীতে।


বিবার্তা/ জাহিদুল/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com