
বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে পশ্চিমারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১৫ মে, বুধবার সন্ধায় রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণফোরাম (একাংশ) ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র সফর সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির মহাসচিব এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি জানি না, আপনারা (গণমাধ্যম) কি অবস্থান তাদের ভেবেছিলেন। বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের আগের অবস্থানেই আছে। আমরা যেটা দেখেছি বেসিক্যালি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে কথা বলেছেন। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান অব্যাহত রেখেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা জানেন যে, যেকোনো দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে হয়…সেজন্য তারা এই সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন। এমনকি সামরিক শাসকদের সঙ্গেও কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে হয়। আজকে বাংলাদেশের যে অবস্থান যে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদের দেশের প্রয়োজনে যেটা মনে করছে সেটাই করছে। কিন্তু আজকে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে করছে না।
তিনি বলেন, তাদের যে হিউম্যান রাইটস রিপোর্ট যেটা বেরিয়েছে সেই রিপোর্টে তো বাংলাদেশে আপনারা যা বলেননি, তার চেয়ে অনেক বেশি রিপোর্টে লিখেছে। এটাতে প্রমাণিত হয় যে, তারা এতটুকুও খুশি না এই বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে।
তিনি আরও বলেন, সরকার একটা ভয়ের আবহ সৃষ্টি করেছে। তারা নতুন নতুন নির্বাচন কৌশল বের করে। ডামি ইলেকশন, নিশিরাতের ভোট করে। দেশের জনগণ নির্বাচন বর্জন করেছে। তারা সেখানে ভোট দিতে যায়নি। মানুষ চায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার সব ধরনের অপকৌশল অবলম্বন করেছে। তারা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠায় দেশের সব প্রতিষ্ঠান তারা ধ্বংস করেছে। এখন যারা এদেশ শাসন করছে এই শাসকগোষ্ঠী জনগণকে সারাক্ষণ প্রতারণা করছে, মিথ্যা কথা বলছে, মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে, মিথ্যা ডাটা দিচ্ছে। যারাই তথ্য আনতে যায় তাদেরকে নিষেধাজ্ঞা দেয়…, আপনারা দেখেছেন সাংবাদিকদেরকে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। সবখানে একই অবস্থা। অর্থাৎ পুরোপুরিভাবে এরা মিথ্যার ওপরে টিকে আছে এবং মিথ্যার ওপরে তারা টিকে থাকতে চায়। মিথ্যা ওপরে কখনো টিকে থাকা যায় না।
বিএনপি মহাসচিব জানান, সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে গোটা দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতেই কাজ করছে বিএনপি ও যুগপতের শরিকরা। যুগপৎ আন্দোলনের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আন্দোলনের কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকাল সাড়ে ৫টায় গণফোরাম ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সাথে বিএনপি বৈঠক হয়। এই বৈঠকে গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, ফজলুল হক সরকার, মুহাম্মদ উল্লাহ মধু এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির বাবুল সরদার চাখারি, পারভীন নাসের খান ভাসানী, এ আর জাফর উল্লাহ চৌধুরী, হারুনুর রশিদ, আলমগীর হোসেন, খাদিজা আখতার ছিলেন।
এরপর সাড়ে ৭টায় গণতন্ত্র মঞ্চের মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জনসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দুই বৈঠকে মহাসচিবের সাথে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ছিলেন।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]