বাড়ির চারিদিকে পানি, বাহির হওয়া যাচ্ছে না। উঠানে চুলা ভিজে গেছে হচ্ছে না রান্না। আলগা একটা চুলা এনে সেখানে রান্না করছি আপাতত। আমরা গরু ছাগল বর্গা এনে পালি এখন তো বন্যা আসছে। এখন কি করে খাবো। বাড়িতে তিনজনই বুড়ো মানুষ। এভাবে কথাগুলো বলছিলেন, সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের মিনহাজ উদ্দিনের স্ত্রী সাহের বানু (৬০)।
তিনি আরও বলেন, স্বামীর বয়স হয়ে গেছে কাজকর্ম করতে পারে না। তার মধ্যে আবার বন্যা আসছে। যে-ভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিসের আমার ঈদ। ঈদ আমারগুলার নাই। যে অবস্থা এখন জীবন বাঁচা নিয়া কথা। বাড়িতে তিনজনই বড়ো মানুষ বাড়ি তলিয়ে গেলে কি হবে আমাদের।
দেশের অভ্যান্তরে ও উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও সবগুলো পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নদী তীরবর্তী চর দ্বীপ চরসহ নিম্নাঞ্চল।
নিমজ্জিত হচ্ছে নদ-নদী অববাহিকার মৌসুমি শাক সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। জেলার নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও কুড়িগ্রাম সদরের নিম্নাঞ্চলের শত শত পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে নৌকায় যাতায়াত করছে একানকার মানুষজন। চর এলাকার নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
আজ (২০ জুন) কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সুত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার ৬৬ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদ সীমার ৭১ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বিপদ সীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদীর পানি জেলার ভুরুঙ্গামারীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদ সীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনও বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২২ ও ২৩ জুন এসব নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বড় কোন বন্যা হবার সম্ভাবনা না থাকার কথাও জানান তিনি।
বিবার্তা/বিপ্লব/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]