
নাটোরের গুরুদাসপুরে মির্জা মাহমুদ খাল পুনঃখননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নে তিনটি দরপত্রে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে আংশিক ওই খাল খনন কাজ বাস্তবায়ন করছেন শেখ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) গুরুদাসপুর অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাবনা-নাটোর ও সিরাজগঞ্জ (পানাসি) জেলার ভূ-উপরিভাগের পানির মাধ্যমে সেচ প্রকল্পের আওতায় গুরুদাসপুর সেচ বিভাগ এই খাল পুনঃখনন বাস্তবায়ন করছে।
সূত্রমতে- গত ৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী পাবনা-নাটোর, সিরাজগঞ্জ জেলার (পানাসি)’র অর্থায়নে ভূ উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। কৈডিমা ব্রিজ থেকে ধানুড়া মিল্কি পাড়া পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলো মিটার দৈর্ঘ্যের খাল পুনঃ খনন কাজের তিনটি দরপত্রে মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। যা বাস্তবায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সেচ বিভাগ গুরুদাসপুর। আরও ৮ থেকে ১০টি দরপত্রের মাধ্যমে অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানায় বিএডিসি।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ এন্টারপ্রাইজ নিয়মনীতির তোয়াক্কা ও নকশা অনুসরণ না করেই খাল খনন করছেন। মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জমি, পুকুর বাঁচাতে খালের দিকও পরিবর্তন করে ফেলছেন তারা।
কান্দাইল গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম শেখের ছেলে মিলন শেখ বলেন, সরকারি খাল খনন করতে গিয়ে ঠিকাদার আমার ব্যক্তিগত জমি কেটে ফেলেছে। প্রতিবাদ করেছি, কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা আমার অভিযোগ আমলে নেননি। তিনি দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
চাপিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসতম আলী বলেন, ‘খালের সাহাপুর এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন হোসেন ও টিপু আলীর দুটি পুকুর রক্ষা করতে সেখানে দরপত্র অনুযায়ী খাল প্রশস্ত করা হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলে খাল ভরাটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিয়মের বাইরে কাজ করলে জনগণ মেনে নেবে না।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ঠিকাদার খালের নিজস্ব নকশা অনুসরণ না করে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর বাঁচাতে মনগড়াভাবে কাজ করছেন। স্থানীয়রা দরপত্র অনুসারে কাজ করতে বললে তারা জনগণকে আদালতে যেতে নির্দেশ দেন।
চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান বলেন, কৃষকদের উন্মুক্ত সেচ ও কৃষি জমির জলাবদ্ধতা রোধে সরকার খাল পুনঃখনন করছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোথাও কোথাও নকশা বহির্ভূত, আবার কারো পুকুর রক্ষা করতে দিকও পরিবর্তন করছে। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন বলেও জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ এন্টারপ্রাইজের মিঠু আহমেদ বলেন, ‘বিএডিসি অফিসের নির্দেশনা অনুসরণ করেই খাল খনন করা হচ্ছে। কোন অনিয়ম করার সুযোগ নেই। দুটি পুকুর মালিক অর্থের বিনিময়ে তাদের পুকুরের পাড় মেরামত করার প্রস্তাব দিলেও তা ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মির্জা মাহমুদ খাল খননে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কাজ চলছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা আক্তার বলেন, ‘অনিয়মের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাইনি। কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিবার্তা/জনি/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]