সিলেট সিটি নির্বাচন
মধ্যরাতে শেষ হবে প্রচারণা, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ১৩২, ভোটকেন্দ্রে বসছে ক্যামেরা
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৩, ১৭:৫৮
মধ্যরাতে শেষ হবে প্রচারণা, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ১৩২, ভোটকেন্দ্রে বসছে ক্যামেরা
সিলেট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আগামী বুধবার (২১ জুন) সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভোট। এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।


১৯ জুন, সোমবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনের সকল প্রকার প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে। সাধারণত আজ শেষ দিন হিসেবে জমজমাট থাকার কথা ছিলো। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে বাগড়া পড়েছে শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণায়।


সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ৮ জন। ইতোমধ্যে নির্বাচন বর্জন করে মাঠ ছেড়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান।


এছাড়া দলীয় মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল ও জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম।


এর মধ্যে জাকের পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচারণায় সরব নয়। অন্যদের প্রচারণা নেই বললেই চলে। ভোটের মাঠে এখন বেশ সরব আনোয়ারুজ্জামান ও বাবুল। এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই হবে লড়াই।


অপরদিকে কাউন্সিলর পদে ৩৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ২৭৩ জন সাধারণ ওয়ার্ডে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (নারী কাউন্সিলর) ৮৭ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।


প্রচার প্রচারণার শেষ দিন হিসেবে আজ (সোমবার) সাধারণত প্রচারণায় মুখর থাকার কথা সিলেট নগরী। কিন্তু বাস্তবে এর উল্টো। সকাল থেকে অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে। এতে সাধারণ প্রার্থী বা ভোটারদের মধ্যে নেই উৎসবের আমেজ।


৩৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী বেলাল আহমদ জানান, তিনি এরই মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে মুরব্বিরা কাজ করছেন। তারা ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। বৃষ্টি বাধা দিলেও কাজ থেমে নেই বলে জানান তিনি।


৩৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আলতাফ হোসেন সুমন রেডিও মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনিও বলেন, বৃষ্টির জন্য প্রচারণা বাধাগ্রস্ত হলেও কাজ চলছে। তিনি ভোটারদের সময়মতো কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহবান জানান।


মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, গত কয়দিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবুও আমাদের প্রচারণা থেমে নেই। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সিলেট অবস্থান করছেন। আওয়ামী লীগ নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করছে।


জাতীয় পার্টি প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, বিজয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। সাধারণ মানুষ নৌকার কর্মী সমর্থকদের উপর খুবই বিরক্ত। তারা বিকল্প চায়। আর বিকল্প হিসেবে লাঙ্গলই তাদের পছন্দ। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।


সিলেট সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসার ফয়সল কাদের বলেন, নির্বাচন আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। আগামীকাল কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে ভোট গ্রহণের সরঞ্জামাদি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও মাঠে নামবে আজ রাত থেকে। মধ্য রাত থেকে সকল প্রচার প্রচারণাও বন্ধ হয়ে যাবে। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।


তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ জুন বুধবার ইভিএম সিস্টেমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আগে ২৭ ওয়ার্ড নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন থাকলেও বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ড নেয়ে সিসিকে এখন মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৪২টি। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীতে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৬ জন।


নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মহানগরীর ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। একইসঙ্গে ভোট কক্ষ রয়েছে ১৩৬৭টি। সেই সঙ্গে অস্থায়ী ভোট কক্ষ রয়েছে ৯৫টি। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইসির নির্দেশনা অনুসারে ভোটকেন্দ্র তদারকি করার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে দুটি সিসি ক্যামেরা থাকবে। একইসঙ্গে ১৩৬৭টি ভোট কক্ষের প্রতিটিতে থাকছে সিসি ক্যামেরা। ১৯০ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টিকে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি ৫৮টি কেন্দ্র সাধারণ বলে চিহ্নিত করেছে। ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ১৫, ২২, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩৬, ৩৮, ৩৯ ও ৪২ নম্বর (মোট ১৮টি) ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম নবগঠিত ৪১ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে সবগুলো কেন্দ্রই ঝুঁকিমুক্ত।


সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) সুদিপ দাস জানান, নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টিকে গুরুত্বপূর্ণ এবং ৫৮টিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ১৩২টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিচারে নেওয়া বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। দূরবর্তী অনেক কেন্দ্র রয়েছে, কিছু কেন্দ্রের আশপাশের পরিবেশ নিরাপদ নয়, কোথাও আবার গোলযোগের সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলো বিবেচনা করে চিহ্নিত করা হয়েছে।


অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিসিক নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমদ জানিয়েছে, ১৯০টি ভোট কেন্দ্রের বাইরে থাকবে দুটি করে সিসি ক্যামেরা। আর ক্যামেরা থাকছে ১৩৬৭টি ভোট কক্ষেও। সবমিলিয়ে মোট সিসি ক্যামেরা থাকছে ১৭৪৭টি। এসব তদারকি করা হবে ইসির প্রধান কার্যালয় থেকে।


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com