আমতলী উপজেলার ৫০% গরু লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগে আক্রান্ত। গত তিন মাসে অন্তত দুই শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের গরুর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে এ রোগের ভ্যাকসিন না থাকায় মহাবিপাকে পরেছে খামারি ও কৃষকরা। দ্রুত সরকারিভাবে ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন খামারিরা। এদিকে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পরায় পশুর হাটে গরু ক্রয়-বিক্রয়ে ধস নেমেছে।
জানা গেছে, গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় আমতলী উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগ দেখা দেয়। মশা-মাছি বাহিত এ রোগ দ্রুত উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলার অন্তত ৫০% গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক।
গত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে অন্তত দুই শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বর্তমানে মহামারি আকারে ধারণ করেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দুই হাজার ৫’শ লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। কিন্তু উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে এ রোগের ভ্যাকসিন নেই।
ভ্যাকসিন না থাকায় গরুর খামারি ও কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। খামারিদের ফার্মেসি থেকে বিভিন্ন কোম্পানি ঔষধ কিনতে হচ্ছে। এতে মহাবিপাকে পড়ছেন তারা। খামারিরা জানান গরুর শরীরের গোটা গোটা উঠে প্রচণ্ড জ্বর হয়। ওই গোটা ফেটে প্রচুর পরিমাণে পচা রক্ত বের হয়। খামারিরা দ্রুত সরকারিভাবে ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে লাম্পি স্কিন রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পরায় মানুষ আতঙ্কে কোরবানির গরু কিনছেন না। এতে বাজারে গরু ক্রয়-বিক্রয়ে ধস নেমেছে।
সোমবার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্তৃপক্ষ এ রোগে আক্রান্ত ৩৫টি গরু চিকিৎসা করে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন।
খামারি দেলোয়ার হোসেন বলেন, খামারে সাতটি গরুর তিনটিই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গরু এনে ব্যবস্থাপত্র নিয়েছি। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অফিসে এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে।
পূর্ব চিলা গ্রামের হেলাল হাওলাদার বলেন, গত শনিবার আমার একটি বাচ্চা গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
খামারি ছত্তার ফকির বলেন, লক্ষ টাকা দামের একটি ষাঁড় গরুর শরীরে গোটা উঠে মারা গেছে। আরো দুটি আক্রান্ত হয়েছে।
আমতলী উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকতা আবুল বাশার বলেন, গরুর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত তিন মাসে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত দুই হাজার ৫’শ গরু চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ টি গরুর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা নিচ্ছে।
আমতলী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক বলেন, উপজেলার অন্তত ৫০ শতাংশ গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু মারা যাওয়ার সংখ্যা কম। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ রোগের ভ্যাকসিন উৎপাদন করেনি।
তিনি আরো বলেন, দেশীয় ও শাহীওয়াল (লাল গরু) এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
বিবার্তা/নোমান/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]